সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, দিনাজপুর ►
দিনাজপুর খানসামায় এ বছর পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলে কোরবানির পশু জেলার সবচেয়ে বড় ষাঁড় হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে ‘কালা পাহাড়’। এটি কোন গল্প বা নাটকের শিরোনাম নয়। এটি কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা ষাঁেড়র নাম।
ষাঁড়টি দেখতে আশেপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে গরু ব্যবসায়ীরা আসছেন, করছেন হাকডাক। তবে ষাঁড়টি মালিক এখনই এই কালা পাহাড় নামে খ্যাত গরুটি ছাড়ছেন না। আশায় আছেন ‘কালা পাহাড়' এর দাম ভালো পেলে তুলে দেবেন ক্রেতার হাতে।
সরেজমিনে খানসামা উপজেলার ৬নং গোয়ালডিহি ইউনিয়নের দণি দুবুলিয়া গ্রামের খামারি নিয়ামত্যুল্লাহ শাহ তাঁর খামারে আলোচিত এই এই ‘কালা পাহাড়’ এর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঐ খামারে গিয়ে দেখা যায়, ইটের দেওয়াল আর টিনের ছাউনি দেওয়া খামারের একপাশে রয়েছে সাদা-কালা রংয়ের এই ষাঁড়টি। কালা পাহাড়ের মাথার উপর মাথার উপর সব সময় ৩ টি বৈদ্যুতিক ফ্যান চলে। রোদ ও তাপ থাকায় ষাড়টিকে দিনের বেলায় ৬-৭ বার গোসল করানো হয়। গরুর খামারের জন্য একজন কর্মচারী নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। এই ষাড়টি এতটাই বড় হয়েছে যে খামার থেকে বের করতে গেলে ইটের দেয়াল কেঁটে বের করতে হবে। এই কালা পাহাড়কে ১০-১৫ জন ছাড়া ষাঁড়টি আটকানো যাবে না।
কয়েকজন গরু ব্যবসায়ীর সাথে কথা হয়, তাঁরা জানায় যে, কালা পাহাড় নামে এই ষাড়টি প্রায় ২৯-৩০ মণ মাংস হবে। তারা ষাড়টিটির দাম বলেন ৮-১০ ল টাকা।
গরু খামারী নিয়ামত্যুল্লাহ শাহ বলেন, ব্যবসার পাশাপাশি প্রায় ৬ বছর ধরে ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টিকে পালন করে আসছি। প্রতিটি ষাঁড় যতœ করে পালন ও বিক্রি করি। অনেক দিনের স্বপ্ন বড় গরু প্রস্তুত করব এবার আমার সেই টার্গেট পূরণ হয়েছে। কোরবানি ঈদ সমনে রেখে ভালো দামে বিক্রির আশা করছি। অনেক গরু ব্যবসায়ী গরুটি দেখে ৮-১০ ল করে দাম বলে যায় । কিন্তু আমার দামে পছন্দ হয় না। বর্তমান গরুটিকে দৈনিক হাজার টাকার গো-খাদ্য খায়।
গোয়ালডিহি ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, গো-খাদ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেকেই গরু-ছাগল পালন বন্ধ করে অনেক খামারী ছেড়েছেন এই পেশা। তারপরও আমাদের এলাকায় খামারী নিয়ামত্যুল্লাহ যে বড় আকারের গরু পালন করে আলোচনার সৃষ্টি করেছেন। সে ভালো দাম পেলে অনেকেই কোরবানির বড় গরু-ছাগল পালনে আগ্রহী হবেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ফ্রিজিয়ান জাতের গরু পালনে অনেকেই আগ্রহী হন না। তবে নিয়ামত্যুল্লাহ শাহ সফল হয়েছে। গরুটির বিষয়ে আমরা খোঁজ খবর নিয়েছি এবং গরুটিকে যাতে কোন প্রকার ওষুধ প্রয়োগ না করা হয় সেজন্য আমরা যোগাযোগ করেছি। গরুটি পালনে আমরা তাকে নানা পরামর্শ দিয়েছি। ভবিষ্যতে এরকম গরু যদি কেউ পালন করতে চায় প্রাণীসম্পদ বিভাগের প থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
দিনাজপুর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন বলেন , এবার জেলায় কোরবানীর জন্য প্রস্তুত রয়েছে ২ লক্ষ ৫৯ হাজার ১ শত ৩৮টি পশু। এর মধ্যে গরু মহিষ রয়েছে ১ লক্ষ ৫১ হাজার ৪ শত ৩৭টি। আর ছাগল ভেড়া রয়েছে ১ লক্ষ ৭ হাজার ৭ শত ১টি। জেলায় চাহিদা রয়েছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার ৫শত ২টি পশু। উবৃত্ত ২৮ হাজার ৬ শত ৩৬টি কোরবানী পশু অন্য জেলায় পাঠানো যাবে ।