Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • ৭ ঘন্টা আগে
  • ৮ বার দেখা হয়েছে

৬ দিনের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের ‘কলঙ্ক’ ঘোচালো ইরান

৬ দিনের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের ‘কলঙ্ক’ ঘোচালো ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক►

ইসরায়েলের সঙ্গে ছয় দিনের যুদ্ধে নাস্তানাবুদ হয়েছিল আরব দেশগুলো—অর্থাৎ সিরিয়া, মিশর ও জর্ডান। সেটা ঘটেছিল ১৯৬৭ সালের জুনে। ঠিক ৫৮ বছর পরের জুনে যেন সেই ‘কলঙ্ক’ মুছল ইরান।

আজ বৃহস্পতিবার ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে চলমান ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ সপ্তম দিনে গড়িয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশগুলোর সহায়তায় গত প্রায় ছয় দশকে মধ্যপ্রাচ্যে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা ইসরায়েল ক্রমাগত আঘাত করেও সামরিক দিক থেকে অপেক্ষাকৃত দুর্বল ইরানকে ‘ধরাশায়ী’ করতে পারেনি। অন্যদিকে ইসরায়েলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে ক্রমাগত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইরান।

অনেকের কাছে মনে হতে পারে—ইসরায়েলের সঙ্গে লড়াইয়ে টিকে থেকে ইরান আরবদের সেই শোচনীয় পরাজয়ের কলঙ্ক থেকে মুক্তি দিয়েছে।

ব্রিটানিকার তথ্য বলছে—ছয় দিনের তৃতীয় আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ১৯৬৭ সালের ৫ জুন। তা স্থায়ী হয়েছিল ১০ জুন পর্যন্ত। এই যুদ্ধের মাধ্যমে ইসরায়েল প্রতিবেশী মিশরের সিনাই ও গাজা উপত্যকা, জর্ডানের পশ্চিম তীর ও জেরুসালেম ও সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয়। এসব অঞ্চলকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েল অধিকৃত ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে।

এতে আরও বলা হয়, ১৯৬৭ সালের শুরুতে সিরিয়া গোলান মালভূমি থেকে ইসরায়েলি গ্রামগুলোয় বোমা ফেলে। সেসময় ইসরায়েলি বিমান বাহিনী সিরিয়ার ছয়টি মিগ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে। মিশর সিনাই উপত্যকায় সেনা মোতায়েন করে।

সে বছরের মে মাসে মিশর জর্ডানের সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি করলে ইসরায়েল মিশরের বিমান বাহিনীকে ধ্বংস করে দেয়। মিশরের হাত থেকে সিনাই ও গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেয় ইসরায়েল।

এরপর সিরিয়াকে গোলান মালভূমি থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর ইসরায়েলি বাহিনী জর্ডানের কাছ থেকে পশ্চিম তীর ও জেরুসালেম দখল করে।

এরপর, সেই আরব দেশগুলোর মধ্যে মিশর ও জর্ডান নিজেদের পরাজয় মেনে নিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে।

এরপর ফিলিস্তিনিদের ওপর নেমে আসে নিপীড়নের খড়গ।

১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের পর তেল আবিবের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে তেহরান। শুধু তাই নয়, ইসরায়েলকে শত্রু হিসেবে ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রীয়নীতি প্রণয়ন করে। ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে শাহ-আমলের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইরান। এরপর থেকেই একে অপরকে ‘অস্তিত্বে জন্য হুমকি’ ভাবতে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশ দুইটি।

১৯৭৯ থেকে ২০২৫ সাল। এই ৪৬ বছর ধরেই চলেছে একে অপরের প্রতি বিষেদাগার। একে অপরকে ধ্বংসের হুমকি। সেই হুমকি শেষ পর্যন্ত সর্বাত্মক যুদ্ধের রূপ নেয় গত ১৩ জুন।

সেদিন কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই ইসরায়েল রাত-গভীরে ইরানের ওপর বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দেশটির শীর্ষ সামরিক ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের হত্যা করে। এর পর থেকে বিভিন্ন সামরিক ও পারমাণবিক লক্ষবস্তুতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এই প্রেক্ষাপটে অনেকেই ধারণা করেছিলেন ইরানও হয়ত সেই আরব দেশগুলোর মতো ছয় দিনের মধ্যে পরাজিত হবে।

যুদ্ধের পঞ্চম দিনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের পক্ষ হয়ে ইরানকে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’র আহ্বান জানালে পরদিন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি জাতির উদ্দেশে বলেন—‘ইরানিরা আত্মসমর্পণের জাতি নয়’।

বাস্তবতা হচ্ছে—ইসরায়েল সেই আরব দেশগুলোর মতো ইরানকে ছয় দিনে পরাজিত করতে পারেনি। ইরান যেন আরবদের ছয় দিনে পরাজয়ের কলঙ্ক ঘুচিয়ে দিলো।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad