নিজস্ব প্রতিবেদক ►
শিশুদের হাতে খড়ি সহ ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা আর নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে গাইবান্ধা শহরের সরকারি কলেজ, সরকারি বালক ও বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, ব্রীজরোড দূর্গাাড়ি মন্দির, বিভিন্ন পাড়ার বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন মন্দির ও পুজা মন্ডবে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়েছে।
ঢাক, কাঁসর, শঙ্খ ও উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ। শাস্ত্রমতে, প্রতি বছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে শ্বেতশুভ্র কল্যাণময়ী বিদ্যাদেবীর বন্দনা করা হয়। ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী এবং শক্তির আধার হিসেবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সরস্বতী দেবীর আরাধনা করেন।
সরস্বতী দেবী শ্বেতশুভ্রবসনা। দেবীর এক হাতে বেদ, অন্য হাতে বীণা। এজন্য তাকে বীণাপানিও বলা হয়। সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, জ্ঞান ও বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী তার আশীর্বাদের মাধ্যমে মানুষের চেতনাকে উদ্দীপ্ত করতে প্রতি বছর আবির্ভূত হন ভক্তদের মাঝে। শিক্ষার্থীরাই এই পূজায় মনোযোগী হয়।
সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যাকমললোচনে বিশ্বরুপে বিশালাহ্মী বিদ্যাংদেহী নমোহস্থতে।" এই মন্ত্র পাঠ করে শিক্ষার্থীরা সরস্বতী দেবীর পায়ে শ্রদ্ধার সহিত ফুল বেলপাতা বিসর্জন দিয়ে মায়ের নিকট বিদ্যা প্রার্থনা করেন। শ্রীশ্রী সরস্বতী দেবীর পূজা ২০২৩ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঘরে ঘরে সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়। গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূজার আয়োজন হলেও সরস্বতী পূজার প্রধান কেন্দ্র হয়ে ওঠে গাইবান্ধা সরকারি কলেজ মাঠ। ৬ ফুট উচ্চতার প্রতীমা দিয়ে পুজা হয় এই প্রতিষ্ঠানে। বিস্তীর্ণ এই মাঠজুড়ে সরস্বতী পূজা চমৎকার এক উৎসবে পরিণত হয়। দুটি প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।
গাইবান্ধা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে সকাল ৯টায় পুরোহিত কালিপদ মুখার্জি পূজার মন্ত্র পাঠ করেন ও সরকারি কলেজে সকাল ১১ টা ৩০ মিনিটে পূজা আরম্ভ হয়। এর ফলে শিক্ষা প্রাঙ্গণে পূজা অর্চনার পাশাপাশি আনন্দে মেতে ওঠেন দর্শনার্থীরা।
গাইবান্ধা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে পূজা পরিচালনা করেন- সিনিয়র শিক্ষক স্বপন সাহা, সহকারী শিক্ষক অনিল সরকার সহ অনেকে। সরকারি কলেজে ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রজত সাহা, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী পূজা পরিচালনা করেন। পূজা শেষে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।