Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১২-৪-২০২৩, সময়ঃ সকাল ১০:২০

সবজির ফেরিওয়ালা...

সবজির ফেরিওয়ালা...

ভবতোষ রায় মনা ►

টাটকা শাক-সবজি রোজদার ও শহরবাসীদের ঘরের দৌরগোড়ায় গিয়ে বিক্রি করতে ব্যস্ত সময় পার করছে আলম, আয়নাল, মজিবরসহ প্রায় ১২ থেকে ১৪ জন ফেরিওয়ালা ভ্যান ভর্তি সবজি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে গাইবান্ধা পৌরসভার অলি গলিতে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, খন্দকার মোড়, ১নং রেলগেট, দাশ বেকারির মোড়, এসকেএস হাসাপাতল মোড়, মাস্টারপাড়া, মুন্সিপাড়াসহ শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ১২ থেকে ১৪ জন ফেরিওয়ালা ভ্যানগাড়িতে করে শশা, লেবু, লালশাক, নাপাশাক, পাটশাক, পুইশাক, লাউশাকসহ বিভিন্ন ধরণের সবজির নাম ধরে হাঁক ডাক শোনা যায়। তাদের ডাকে সারা দিয়ে পথচারি অথবা বাসাবাড়ীতে বের হয়েও এসব পণ্য কিনতে দেখা গেছে। রমজান মাসে বিশেষ করে বিকেল ৪টার পর থেকে ভ্রাম্যমান সবজি বিক্রি শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে বেচাবিক্রি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সবজির ফেরিওয়ালারা পাইকারিভাবে জমি থেকে এসব সবজি কিনে আনছেন। জেলার সদর, সাদুল্লাপুর, পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে একটু কম দামে কিনে এনে ৫ থেকে ১০ টাকা লাভে তারা পথেঘাটে বিক্রি করছেন। ফেরিওয়ালাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রিস্কা-ভ্যান চালায়, তার পর জমি থেকে পাইকারীভাবে বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি কিনে ভ্যানে সাজিয়ে তারা গাইবান্ধা শহরের মোড়ে মোড়ে বিক্রি করেন। শাকসবজি বিক্রি করে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে তাদের সংসার ভালো ভাবেই চলে বলে তারা জানান। 

খন্দকার মোড় এলাকার ভাড়াটিয়া ময়না রায় জানান, বাড়ি থেকে হেঁটে কিংবা রিস্কায় যেয়ে বাজারে কিনতো হতো। কিন্ত হাতের কাছেই পাচ্ছি টাটকা সবজি, সেই জন্য কিনলাম। দু’এক দিন পররেই শাক কিনছি। বাজারেও যে দাম এখানেও একেই দাম।গোরস্থান মোড়ের তাওহীদ রহমান জানান, সারাদিন অফিসেই থাকতে হয়। আর যেটুকু সময় পাচ্ছি বাড়িতে তার মধ্যেই বাজারের দামে বাড়ির কাছে শাক সবজি পেয়ে যাচ্ছি। এতে সময়টা অপচয় হয় না। 

ডেভিট কোম্পানিপাড়ার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মানুষের চাহিদা পূরনে সবজির ফেরিওয়ালা যে কাজটি করছে, এতে আমাদের মত চাকুরিজীবিদের জন্য সুবিধাতো আছেই, সে সাথে এই গরীব লোকগুলোরও রোজগারের বিষয়টিও রয়েছে। তারা কষ্ট করে অন্যদের প্রয়োজন মেটাতে রৌদ্দের মধ্যে বিভিন্ন রকমের শাক সবজি ভ্যানে করে বিক্রি করছেন। বাজারে যাবার ঝামেলা এড়াতে মানুষ দোড়গোড়ায় এসব কেনাকাটা করছে। বাড়ির গিন্নীরাও হাতের নাগালে পছন্দের সবজি কিনছেন। 

সবজি বিক্রেতা মজিবর রহমান জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে শহরে ভ্যানগাড়ি চালানোর পাশাপাশি একটু ভালোভাবে চলার জন্য বাধ্য হয়ে সবজি বিক্রির ব্যবসায় নেমেছি। সারাদিন যা কামাই করি তা দিয়ে জমি থেকে কম দামে সবজি কিনে এনে বিকেল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ভ্যানে বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে ৪ সদস্যের সংসার ভালোই চলছে।

আয়নাল হক নামের আরেক সবজি বিক্রেতা বলেন, বাজারে সব জিনিসের দামেই বৃদ্ধি পেয়েছে। সারাদিন যে কামাই করি তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই লাজ-লজ্জা সরোম ভেঙে বাধ্য হয়ে সবজির ফেরিওয়ালা হয়েছি। স্ত্রী-সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে তারা এমন পেশা বেছে নিয়েছেন বলে জানান।  

এ প্রসঙ্গে গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, জেলায় এ মৌসুমে যে পরিমাণ শাক-সবজি ব্যাপক আবাদ হয়েছে। ভ্যান-রিস্কা চালানোর পাশাপাশি তারা যে বিভিন্ন ধরণের সবজি বিক্রি করে বাড়তি টাকা উপার্জন করায় তাদের সংসারে স্বচ্ছলতা এসেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad