সুুন্দরগঞ্জ প্রতিনিধি ►
গত এক সপ্তাহ ধরে টানা অবিরাম বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীগর্ভে বিলিন হচ্ছে ফসলি জমি, রাস্তাঘাট। নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২০০ শতাধিক পরিবার। ভাঙনের মুখে শতাধিক একর ফসলি জমি ও বসতবাড়ি।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার পানি বর্তমানে বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে উপজেলার হরিপুর, শ্রীপুর চন্ডিপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের তথ্য মতে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০টি পরিবার এবং ২০০ হেক্টর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। উজানের ঢলে নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় কমপক্ষে ২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি পরিবারগুলো আশ্রয় কেন্দ্র এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে।
হরিপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গার চর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মিয়া জানান, পানি এখনও ঘরের ভিতরে ওঠেনি। তবে যে হারে পানি বাড়ছে, তাতে করে আগামি ৩৬ ঘন্টার মধ্যে ঘরের ভিতরে পানি ঢুকে যাবে। তিনি আরও বলেন, গত এক সপ্তাহের নদী ভাঙনে তার ৩ বিঘা জমি উঠতি তোষাপাটসহ নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
কাপাসিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মনজু মিয়া জানান, তার ইউনিয়নের কমপক্ষে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি ৫০টি পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। অনেক পরিবার ইতিমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে। আগামি ৩৬ ঘন্টার মধ্যে গোটা চরাঞ্চলের কমপক্ষে এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন ভাঙন ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় হাজারও পরিবার ভাঙনের সন্মুখিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মন্ডল জানান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিকট হতে পানিবন্দি ও নদী ভাঙনের শিকার পরিবারের তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পানিবন্দি পরিবারদের তালিকা চুড়ান্ত করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নূর-এ আলম জানান, তিস্তায় পানি বাড়ছে। এখনও সুন্দরগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। কাপাসিয়া ইউনিয়নে কমপক্ষে একশত পরিবার পানিবন্দি এবং ৫০টি পরিবার ভাঙনের মুখে পড়ায় বসতবাড়ি সরিয়ে নিয়েছে।