নিজস্ব প্রতিবেদক ►
গাইবান্ধার নিভৃত অঞ্চলে কৃষকরা রোপন করেছে রোবো ধানের চারা। ইতোমধ্যে নজর কাড়ছে সবুজের সামাহার। অধিক ফলন ঘরে তোলার লক্ষ্যে শুরু হয়েছে খেত পরিচর্যাসহ সার প্রয়োগ। পোকার আক্রমণে যেন ফসলের ক্ষতি না হয়, সেজন্যে স্থাপন করা হচ্ছে পার্চিং। অর্থাৎ গাছের ডাল বা কঞ্চি পূঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর এই পার্চিংয়ে বসিয়ে ক্ষতিকারক পোকা দমন করছে পাখিগুলো।
সম্প্রতি গাইবান্ধার কৃষকের মাঠে দেখা গেছে, পার্চিং বসানোর চিত্র। এরই মধ্যে একদল ফেচকা পাখি উড়ে এসে জুড়ে বসেছে এই পার্চিংয়ে। ওঁৎপেতে এসব পাখি দমন করছে ক্ষতিকারক পোকা। যার কারণে ধীরে ধীরে এই পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, বোরো ধানের জমিতে পোকামাকড় দমনে পার্চিং পদ্ধতি একটি সফল প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে সহজে ক্ষতিকারক পোকা নিধন ও আর্থিক সাশ্রয় হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে এ পদ্ধতির ব্যবহার বাড়ছে। এতে কীটনাশক ছিঁটিয়ে পোকা দমনের প্রয়োজন হয় না। এখন প্রকৃতির মুক্ত পরিবেশে উড়ন্ত পাখি যেন কৃষকের পরম বন্ধু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কৃষক মতাজ উদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। গত বছরের তুলনায় এবার বিদ্যুৎ-ডিজেল ও অন্যান্য কৃষিপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে বোরো আবাদে খরচ বেশী হচ্ছে তার। তাই কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে কিটনাশকের পরিবর্তে পার্চিং স্থাপনের মাধ্যমে পাখি দিয়ে পোকামাকড়র দমন করছেন।
খাজানুর প্রামানিক নামের আরেক বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জমিতে পোঁতা পার্চিংয়ে বসে বসে পাখিরা পোকা খায়। এতে করে ফসল ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছি। তেমনি আর্থিক সাশ্রয়ও হচ্ছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের মিয়া বলেন, মাজরা পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতির কোন বিকল্প নেই।
একদম পরিবাশেবান্ধব পদ্ধতি। এ নিয়ে কৃষকদের আগ্রহ করে তোলা হচ্ছে। গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বেলাল উদ্দিন জানান, চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ২৮ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ অর্জন হয়েছে। এই আবাদে কৃষকদের লাভবান করতে ইতোমধ্যে প্রণোদনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে কিটনাশকের পরিবর্তে পার্চিং ব্যবহারসহ কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।