Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১১-৩-২০২৩, সময়ঃ সকাল ০৯:৪৫

পঞ্চগড়ে তাণ্ডবের নয় দিনেও ভিটায় ফেরেনি সবহারা মানুষ

পঞ্চগড়ে তাণ্ডবের নয় দিনেও ভিটায় ফেরেনি সবহারা মানুষ

পঞ্চগড় সংবাদদাতা ►

পিটিয়ে হত্যা, বাড়িঘর, দোকাপাট ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আতঙ্ক কাটেনি পঞ্চগড়ের আহমদ নগর ও আশপাশের এলাকায়। এখনও ঘরে ফেরেনি আহমদিয়া সম্প্রদায়ের অধিকাংশ লোক। অনেক পরিবার জলসা মাঠে ত্রিপল টানিয়ে এবং মসজিদে আশ্রয় নিয়েছে।  শুক্রবার জেলা শহরের আহমদ নগর, বোদা উপজেলার শালশিড়ি, ডাঙ্গাপাড়া, ফুলতলা এলাকা ঘুরে জানা গেছে, ভয়ে লোকজন বাড়ি ফিরছে না। পুড়িয়ে দেওয়া বাড়িঘর এখনও পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

গত ৩ মার্চ জুমার নামাজের পর ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে হামলা চালানো হয় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর। গতকাল জুমার নামাজের আগেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আহমদ নগরে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবির টহল জোরদার করা হয়। জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। জুমার নামাজের পরপরই জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা শহরের শেরেবাংলা পার্ক মোড় এলাকা পরিদর্শন করেন। সেখান থেকেই সর্বপ্রথম আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিােভ করা হয়েছিল। 

হামলার সময় করতোয়া পাড়ের দক্ষিণ শালশিড়ি গ্রামে অন্য অনেক বাড়ির সঙ্গে মজনু মিয়ার বাড়িতে অগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মজনু স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িটির এক ঘরে এবং বাকি তিনটি ঘরে তিন ছেলে সেলিম আহমদ স্বপন, জাহেদুল ইসলাম আপন এবং খোকন আহমদ স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাস করতেন। দুষ্কৃতকারীরা সব ঘর পুড়িয়ে দেওয়ায় চার পরিবার ভিটাছাড়া হয়ে পড়ে। তারা আশ্রয় নিয়েছিল আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ‘শালশিড়ি বায়তুল আফিয়াত মসজিদ ও মাদ্রসায়’। সেখানে কয়েক দিন থাকার পর মজনু মিয়ার তিন ছেলে তাঁদের স্ত্রীদের সন্তানসহ বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন। 

মজনু মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া বেগম বলেন, ‘আমি খুবই অসুস্থ, প্রতিদিন ওষুধ খেতে হয়। কিন্তু ওষুধও পুড়ে গেছে। ঘটনার পর আট দিন ধরে কোনো ওষুধ খাইনি। এখনও আতঙ্কে আছি। কখন কি হয় জানি না।’ 

এদিকে আহমদিয়া সম্প্রদায় ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আরও তিনটি মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও আটজনকে। এ নিয়ে ১৬ মামলায় মোট গ্রেপ্তার ১৭৩ জন।

পুলিশ জানায়, আরও মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এলাকায় বর্তমানে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। তবে আহমদ নগরের আশপাশের কায়েকটি গ্রাম এবং বোদা উপজেলার ফুলতলা, ডাঙ্গাপাড়া, সোনাদান্দি, মানিকপিরসহ অধিকাংশ গ্রামে গ্রেপ্তার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পুলিশের প থেকে বলা হচ্ছে, ঘটনায় জড়িত নন, এমন কারও আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। পুলিশ সুপার সিরাজুল হুদা বলেন, যারা ঘটনায় জড়িত নন, তাঁদের কোনো হয়রানি করা হচ্ছে না। ভিডিও ফুটেজ, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নাশকতায় অংশগ্রহণকারীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে।

জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার আমরা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি। কোথাও আতঙ্ক নেই। লোকজন স্বাভাবিক চলাফেরা করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad