পীরগঞ্জ(রংপুর)প্রতিনিধি ►
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার লালদীঘি ছোট ফতেহপুর গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আহাদ আলী (৩০)। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া আহাদ আলী কিশোর বয়স থেকেই জঠরের জ্বালা নিবারনে অন্নের দ্বারস্থ হতে হয়েছে।
সমাজ সেবা বিভাগের দেয়া হাতের সাদা লাঠিটাকে অবলম্বন করে দিনভর উপজেলা সদরে এক জনের কাছ থেকে আর এক জনের কাছে। হাত পেতে যা আসে তাই দিয়ে দিন পার করতে হয়। কন্ঠ ভাল হওয়ায় মাইকে প্রচারনায় করেই দিন কাটতো এক সময় আহাদ আলীর। একবার শুনলেই মুখস্ত হয়ে যেত। দ্বিতীয়বার শোনার কোন প্রয়োজন হতো না। তাই যে কোন ধরণের প্রচারনা তার দ্বারা সম্ভব হতো। রোজ ২/৩,শ টাকা আয় হতো। কোথাও কোন প্রচারণার প্রয়োজন হলেই তার ডাক পড়তো। প্রায় প্রতিদিন মাইকিং এর কাজ থাকায় প্রচুর টাকা আসতো। সংসারের অভাব অনাটন ছিল না বললেই চলে।
ডিজিটাল যুগে মেমোরী কার্ড পদ্ধতি চালু হওয়ায় ধ্বস নামে তার কারবারে। এখন আর মাইকিং এর জন্য আহাদ আলীর ডাক পড়ে না। আয় রোজগার তাই শুন্যের কোঠায়। যে কারণে এখন লাঠিটাকে অবলম্বন করে রোজ ৩ কি: মি: পথ মাড়িয়ে উপজেলা সদরে এসে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত চষে বেড়াতে হয়। হাত পাততে হয় এ ওর কাছে। যা আয় হয় তা দিয়েই ৪ সদস্যের সংসার চালাতে হয় তাকে।
ছেলে মোরছালিন উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ে। মেয়েটা ছোট। ছেলের পড়ালেখার খরচও চালাতে হয়। তিন মাস পর প্রতিবন্ধী ভাতা জোটে ২৫’শ টাকা। তা দিয়ে আর ক’দিন চলে ? তাই অভাব অনাটন এখন তার নিত্য সঙ্গী। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেয়াটাই কি তার অপরাধ ? সমাজের বিত্তবানদের কাছে আহাদ আলীর তাই করুণ আবেদন, যদি কেউ একটা কিছু করে দিত। বিশেষ করে একটা গাভী পালনের ইচ্ছে তার অনেক দিনের। সমাজে এমন কেউ কি আছেন ? যে আহাদ আলীর এ ইচ্ছেটা পুরন করে দিতে পারেন !