দিনাজপুর প্রতিনিধি►
দেশের প্রথম পেটে জোড়া লাগানো দুই বোন মনি-মুক্তাকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা দিনাজপুরের বীরগঞ্জের আলোচিত যমজ দুই বোনের জম্মদিন (২২ আগষ্ট) আজ ।
২০০৯ সালের এই দিনে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে পেট জোড়া লাগা অবস্থায় জন্ম হয়েছিল মনি ও মুক্তার। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তারা পা দিয়েছে ১৫ বছরে। এখন স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে।
জানা যায়, উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের ঝাড়বাড়ী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে মনি-মুক্তা। পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমেও যুক্ত তারা। মায়ের মুখের চিকিৎসকদের অবদানের কথা শুনার পর এখন তারা চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। চিকিৎসক হয়ে সেবা করতে চায় দুস্থ ও অসহায় মানুষের।
২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকরা অপারেশনের মাধ্যমে মনি-মুক্তাকে আলাদা করেন। এটি দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় নতুন ইতিহাস তৈরি করে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পেট জোড়া লাগানো শিশুর পৃথকীকরণের ঘটনা এটি দেশে প্রথম। আর ঝুঁকিপূর্ণ এ চিকিৎসায় বাংলাদেশের খ্যাতিমান চিকিৎসক এ আর খানের সাফল্য বিশ্ব দরবারে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে আরও সম্ভাবনাময় করে তুলেছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২২ আগস্ট দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর ল্যাম্ব হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পৃথিবীর আলো মনি-মুক্তা। ২০১০ সালে ৩০ জানুয়ারি ঢাকার শিশু হাসপাতালে নিয়ে দুই বোনকে ভর্তি করেন বাবা জয় প্রকাশ পাল। একই বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. এ আর খানের নেতৃত্বে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুই বোনকে আলাদা করা হলে তখন থেকেই তারা ফিরে পায় স্বাভাবিক জীবন। সেই সঙ্গে দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানে সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস।
মনি জানিয়েছে, তাদের জন্মের পর যে ছবিগুলো তোলা হয়েছিল, তা দেখে বুঝেছে তারা স্বাভাবিক ছিল না। চিকিৎসাবিজ্ঞানের বদৌলতে তারা স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে। এ কারণে তারা চিকিৎসক হতে চায়। মুক্তার ভাষ্য, চিকিৎসক এ আর খানসহ যেসব চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টরা দুই বোনকে এ পর্যন্ত আসতে সহায়তা করেছেন, তাদের কাছে তারা চিরকৃতজ্ঞ। মানুষের মতো মানুষ হতে দোয়া চায় তারা।
সেই মনি-মুক্তার জন্মদিন প্রতিবছর ঘটা করে পালন করে তার পবিরারের লোকজন ও এলাকাবাসী।
মনি-মুক্তার বাবা জয় প্রকাশ বলেন, ১৪ বছর পার করে তারা দুই বোন ১৫ বেছরে পা দিয়েছেন। তারা দুই বোন বর্তমানে উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের ঝাড়বাড়ী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। আমি দেশবাসীর কাছে আমার মেয়েদের জন্য দোয়া চাই, তারা যেন বড় হয়ে দেশের মানুষের সেবা করতে পারে। ছাত্রী হিসাবে অনেক মেধাবী বলেও তার শিক্ষকেরা জানান।