Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৫-১-২০২৪, সময়ঃ বিকাল ০৪:৪২

ঠান্ডায় বোরো চারা রোপনে সুন্দরগঞ্জে দিনমজুর সংকট

ঠান্ডায় বোরো চারা রোপনে সুন্দরগঞ্জে দিনমজুর সংকট

এ মান্নান আকন্দ, সুন্দরগঞ্জ►

চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতেই ঘন কুয়াশা ও প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে চারা রোপনে দিনমজুর সংকট দেখা দিয়েছে। দেরিতে হলেও ইতিমধ্যে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বোর চাষাবাদ শুরু করেছে কৃষকরা। 

কিন্তু দিনমজুর সংকটের কারনে উচ্চ ও মধ্য বিত্ত শ্রেনির কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। এমনিতেই উপজেলায় কৃষি কাজের দিনমজুরের সংখ্যা অনেক কম। তাছাড়া বৈরি আবহাওয়ার কারনে অনেক দিনমজুর কৃষিকাজ করতে রাজি হচ্ছে না। চড়া দামেও মিলছে না দিনমজুর। 

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরেফিরে দেখা গেছে, প্রচন্ড ঠান্ডার পরও গত ১০দিন হতে বোর চারা রোপন শুরু করেছে কৃষকরা। নিন্ম শ্রেনির কৃষক ও বর্গা চাষিরা পরিবার পরিজন নিয়ে বোর চাষাবাদের কাজ করছে। কিন্তু যেসব কৃষক দিনমজুরের উপর নির্ভরশীল তারা বিপাকে রয়েছেন। বীজতলায় চারার বয়স বেশি হয়ে যাওয়ার কারনে দ্রুত ক্ষেতে চারা রোপন করার জরুরী হয়ে পড়েছে দাবি অনেক কৃষকের। 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা, চলতি মৌসুমে বোর চাষাবাদের লক্ষমাত্রা ২৫ হাজার ৬৬৫ হেক্টর। গত বছরের নভেম্বর মাস হতে কৃষকরা বীজতলায় বীজ ফেলতে শুরু করে। সে মোতাবেক চলতি বছরের জানুয়ারী মাস হতে চারা রোপন শুরু করতে হবে। 

উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়নের কৃষক তারা মিয়া জানান, ইতিমধ্যে তিনি নিচু এলাকার প্রায় দুই বিঘা জমিতে চারা রোপন করেছেন। শুধুমাত্র চারা রোপনে দিনমজুরি দিতে হয়েছে ২ হাজার ৫০০ টাকা। গত বছরের তুলনায় ১ হাজার টাকা বেশি দিতে হয়েছে। দিনমজুরের মজুরি দিতে হচ্ছে ৫০০ হতে ৫৫০ টাকা।

তারাপুর ইউনিয়নের কৃষক রেজাউল ইসলাম জানান, ৫০ টাকা মজুরি বেশি দিয়েও দিনমজুর পাওয়া যাচ্ছে না। ঠান্ডার কারনে অনেকে কৃষিকাজ করতে চাচ্ছে না। বীজতলায় চারার বয়স বেশি হওয়ার কারনে দ্রুত চারা রোপন করতে হচ্ছে। সে কারনে বিঘা প্রতি ১ হাজার টাকা বেশি দিয়ে চারা রোপন করে নিতে হচ্ছে।

বেলকা ইউনিয়নের বর্গাচাষি সায়েদ মিয়া জানান, দিনমজুরের মজুরি দেয়ার টাকা নেই। সে কারনে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের নিয়ে চারা রোপন করছি। দিনমজুর দিয়ে কাজ করলে চাষাবাদে তার লোকসান হবে। 

শান্তিরাম গ্রামের দিনমজুর হাফিজার মিয়া জানান, কনে কনে ঠান্ডায় পানির মধ্যে কাজ করা অত্যন্ত কষ্টকর। পেটের দায়ে কাজ করতে হচ্ছে। বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম বেশি, সেই তুলনায় মজুরি বেশি দেয়া দরকার কৃষকদের। কিন্তু অনেকে বেশি মজুরি দিতে চায় না। 

দহবন্দ ইউনিয়নের দিনমজুর স্বপন কান্ত জানান, ৫০০ টাকা দিনমজুরি দিয়ে এখন আর চলে না। বাজারে সব জিনিেিসর দাম বেড়ে গেছে। কিন্তু মজুরি বাড়েনি খুব বেশি। ঠান্ডায় একটি কাজ করলে আর একদিন করতে ইচ্ছা করে না। তাছাড়া ঠান্ডার কারনে নানাবিধ রোগব্যাধি দেখা দেয়। 

উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা নুরুল হুদা জানান, চলতি বোর মৌসুমে চারা রোপন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে নিচু জমিতে চাষাবাদ শুরু করেছে কৃষকরা। দিনমজুর সংকট নেই, তবে ঠান্ডার কারনে অনেকে পানিতে নেমে কাজ করতে চাচ্ছে না। আশা করিেছ বৈরি আবহাওয়া কেটে গেলে এ সমস্যা দুর হয়ে যাবে।

উপজেলা কৃষি অফিসার রাশিদুল কবির জানান, বৈরি আবহাওয়া কেটে গেলে অল্প সময়ের মধ্যে বোর চারা রোপন শেষ হয়ে যাবে। বোর চাষাবাদে বেশি দিনমজুর লাগে না। প্রচন্ড ঠান্ডার কারনে দিনমজুররা পানিতে কাজ করতে চাচ্ছে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad