Ad
  • মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৯-৭-২০২৩, সময়ঃ সকাল ০৯:৫১

কাটাদ্বারা-খেয়াঘাট কাঁচা রাস্তায় জনদুর্ভোগ

কাটাদ্বারা-খেয়াঘাট কাঁচা রাস্তায় জনদুর্ভোগ

ভবতোষ রায় মনা ►

গাইবান্ধার ফুলছড়িতে কাটাদ্বারা ওয়াপদা বাঁধ থেকে খেয়াঘাট পর্যন্ত মাত্র দেড় কিলোমিটার রাস্তার কারণে জনগন চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। কাঁচা ভাঙ্গাচোরা ও কর্দমাক্ত এ রাস্তায় যানবাহন চালকদের কষ্টের শেষ নেই। বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় বিপাকে পড়েছে ফজলুপুর ইউনিয়নসহ উড়িয়া ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। রাস্তাটি পাকাকরণে এলাকাবাসী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

স্থানীয়রা জানায়, শুকনো মৌসুমে কষ্ট করে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তার করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়। আশপাশের কাঁচা রাস্তাগুলো পাকাকরণ হলেও দীর্ঘদিনেও পূর্ণাঙ্গভাবে এ রাস্তাটি পাকা করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। নির্বাচন এলেই প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতারা রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচিত হওয়ার পর পাকা করা তো দূরের কথা মেরামত করারও কোনো উদ্যোগ নেন না। ফজলুপুর ইউনিয়নবাসী ফুলছড়ি উপজেলা হেড কোয়ার্টারে আসা-যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কেতকিরহাট থেকে উড়িয়া খেয়াঘাট, হাওয়া ভবন থেকে খেয়াঘাট, মশামারী থেকে খেয়াঘাট, গুণভুড়ি থেকে খেয়াঘাট রাস্তাগুলোর একই অবস্থা। প্রতিটি রাস্তা প্রায় দেড় থেকে দুই কি:মি:। দীর্ঘদিনেও এ রাস্তাগুলো মেরামত/সংস্কার না করার কারণে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

এ পথেই ভ্যান চালান আব্দুল রশিদ ও রফিকুল ইসলাম। তারা জানান, কাটাদ্বারা ওয়াপদা বাঁধ থেকে খেয়াঘাট পর্যন্ত জনপ্রতি ভাড়া ১০ টাকা। এই কাদা রাস্তাত যাত্রী নিয়া ভ্যান চালাতে খুব কষ্ট হয়। যাত্রীরা তো ভাড়া বেশি দেয় না। সরকার এত উন্নয়ন করে হামার এ রাস্তাটা ভালো করি দিলেই কষ্টটা কম হয়।

নৌকা চালক বাদশা জানান, বৃষ্টি হলে কাঁচা রাস্তায় কাদাপানি জমে থাকে। তখন রিকশা ও অটোরিকশা চলতে পারে না। এমনকি হেঁটে চলাচলও কঠিন হয়ে পড়ে। মানুষ যদি রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে না পারে, তাহলে আমার নৌকায় যাত্রী কিভাবে পাবো। রাস্তাঘাটের যত উন্নয়ন হবে, তখন আমাদের ইনকাম বাড়বে।

প্রতিনিয়ত এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নাজিম উদ্দিন। তিনি আক্ষেপ নিয়ে জানান, বৃষ্টি বাদলের দিনে এ রাস্তায় কাঁদা পানিতে চলাচল করতে পারে না মানুষজন। তারপরও দুর্ভোগের শিকার হয়ে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। এ কাঁচা রাস্তাটি সংস্কার না করার কারণে এ পথে চলাচলকারী শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সাধারণ মানুষ নিয়মিত চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। 

স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, ওয়াপদা বাঁধ থেকে খেয়াঘাট পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালি আর বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলেই একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বৃষ্টির ফোটা পড়ার পরই কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। কাদায় চলতে গিয়ে অনেকেই পিচলে পড়ে পড়নের কাপড়চোপর নষ্ট হয়ে গন্তব্যে যাওয়ার আগেই বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হন।

ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জানান, কাটাদ্বারা গ্রামের চলাচলের একমাত্র এই রাস্তাটি কাঁচা ও কর্দমাক্ত। ফলে যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হাঁটাই দুষ্কর। আমি জনপ্রতিনিধি থাকাকালীন রাস্তাটির সংস্কার করলেও এরপর আর কেউ করেনি।

উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: গোলাম মোস্তফা কামাল পাশা বলেন, টিআর, কাবিখা প্রকল্প থেকে গত বছর রাস্তাটি সংস্কার করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের ছোট প্রকল্প দিয়ে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব না। তাই রাস্তাটি আরসিসি ঢালাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একটি প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলেই দ্রুত কাজ করা হবে।

ফুলছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শহিদুজ্জামান শামীম জানান, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে তিন মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছি রাস্তাটি সংস্কার কাজের জন্য। কিন্তু ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ধসে গেছে। আবার কিছু কিছু স্থানে বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে কর্দমাক্ত হয়ে থাকছে। এই মুর্হুতে সংস্কার করার জন্য কোন বরাদ্দ নেই। তবে ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার বরাবরে রাস্তাটি আরসিসি ঢালাইয়ের জন্য একটি পত্র প্রেরণ করেছেন।
 

নিউজটি শেয়ার করুন

Ad

এ জাতীয় আরো খবর
Ad
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Ad