গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধি►
গোবিন্দগঞ্জে চায়নাদুয়ারী শয়তান জালের ব্যবহারে মাছশূণ্য হয়ে পড়ছে করতোয়া নদীসহ উন্মুক্ত জলাশয়। স্থানীয়দের অভিযোগ সরকারি নিয়ন্ত্রণ না থাকায় হাটবাজারে প্রকাশ্যে যেমন এই জাল বিক্রি হচ্ছে তেমনি নদী ও জলাশয় গুলিতে ক্রমেই বেড়ে চলেছে এই জালের ব্যবহার। মাঝে মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করলেও জেলেদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে পরিকল্পিত উদ্যোগ না থকায় থামছে না এই ভয়ংকর জাল দিয়ে মাছ শিকার।
উপজেলার কাটাবাড়ী ইউনিয়নের বালুপাড়া দিয়ে করতোয়া নদী প্রবেশ করে শালমারা ইউনিয়নের শিব বিশুরপাড়া পর্যন্ত গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রবাহিত হয়েছে। এই নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ২/৩ হাজার চায়না দুয়ারী জাল বা শয়তান জাল পেতে মাছ নিধন করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, চায়না দুয়ারী মাছ শিকারে একটি ভয়ঙ্কর ধরণের জাল। এই জালে পরলে শুধু মাছ নয় যেকোন ধরণের জলজ প্রাণীও শিকার হয়ে যায়। এই জাল ব্যবহার অব্যহত থাকলে আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে করতোয়া নদী এবং উুুন্মক্ত জলাশয় মাছ সহ নানা ধরণের জলজ প্রাণী মারা পরে যাবে। সংকটে পড়বে জীববৈচিত । স্থানীয়রা জানান নদীর পাশাপাশি ছোট বড় উন্মুক্ত জলাশয় গুলিতেও মাঝে মধ্যে এই জাল ব্যবহার করা হয়।
নদীপার্শ্ববর্তী দরবস্ত ইউনিয়নের গোশাইপুর গ্রামের আজাদুুল ইসলাম বলেন চক রহিমাপুর থেকে পলুপাড়া পর্যন্ত করতোয়া নদীর প্রায় ৬/৭শ’টি চায়নাদুয়ারী জাল বা শয়তান জাল ব্যবহার হচ্ছে। সারাদিন ও রাতে জাল গুলি নদীর তলদেশে পেতে রাখা হয়। একবার এই জালের পথ গলিয়ে মাছ ভিতরে প্রবেশ করলে বের হওয়ার আর কোন সুযোগ থাকে না সেজন্য প্রতিদিন এই জালে ছোটবড় নানা ধরণের মাছ ধরা পরছে।
চক রহিমাপুর গ্রামের বাদশা মিয়া বলেন, আগে এ সময় নদী ও জলাশয়ে নানা ধরণের দেশী মাছ পাওয়া যেত। এলাকার ছোট বড় বাজারে গুলিতে পাওয়া যেতো প্রচুর মাছ। এখন গ্রামের বাজারে চালানি অথবা পাশর্^বর্তী জেলার মাছ ছাড়া ছোট দেশী মাছ পাওয়া যায়না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চায়না দুয়ারী জালের একজন মালিক বলেন, পেটের দায়ে এই জাল ব্যবহার করছি। আসলে এই জাল মারাত্বক ধরণের ক্ষতিকর। এতে শুধু মাছ নয় অনেক সময় সাপ-ব্যাঙ ধরা পরে। এজন্য এই জালের ফাঁদ অত্যন্ত ভয়ংঙ্কর।
গোবিন্দগঞ্জের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্র্তা এমরান হোসেন চৌধুরী বলেন চায়না দুয়ারী জাল দিয়ে মাছ শিকার নিষিদ্ধ। তার পরেও যারা এই জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার অব্যহত রেখেছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু চায়না দুয়ারী জাল ধ্বংস করা হয়েছে।