• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৬-৮-২০২৩, সময়ঃ রাত ০৮:৪৯

সৈয়দপুরে দিনভর হোটেল-রেস্তোরা বন্ধ



সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি►

নীলফামারীর সৈয়দপুরে হাঁসের মাংস পরিবেশনকে কেন্দ্র করে হোটেল ও পিকআপ শ্রমিকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাতে স্থানীয় তাজির উদ্দিন গ্র্যান্ড হোটেলের এই ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক ও শ্রমিকরা গভীর রাত পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখে।

পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবোধকারীরা সড়ক থেকে সরে গেলেও হোটেল-রেস্তোরা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর প্রেক্ষিতে আজ শনিবার (২৬ আগস্ট) দিনভর শহরের সকল হোটেল রেস্তোরা বন্ধ ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে পর্যায়ক্রমে খুলতে দেখা যায় তৈরী খাবারের এসব প্রতিষ্ঠান।

শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল থেকে হোটেল মালিক ও শ্রমিক সমিতি যৌথভাবে ওই ঘোষণা বাস্তবায়ন করছে। এছাড়া হামলাকারীদের বিরুদ্ধে তাঁরা সৈয়দপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে সৈয়দপুরের পিকআপ শ্রমিকদের কয়েকজন ওই হোটেলে খাবার খেতে যান। এ সময় হোটেল শ্রমিককে তাঁরা হাঁসের গোশত পরিবেশন করতে বলেন। হোটেল শ্রমিক পরিবেশনকৃত গোশত হাঁসের দাবি করলেও খাওয়ার পর সেগুলো ব্রয়লার মুরগির গোশত বলে অভিযোগ করেন পিকআপ শ্রমিকরা।

এ নিয়ে হোটেল শ্রমিকদের সাথে তাঁদের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এরই জেরে পরবর্তীতে আরও কয়েকজন পিকআপ শ্রমিক গিয়ে হোটেল শ্রমিকদের মারধর ও হোটেলের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সব হোটেল বন্ধ করে মালিক ও শ্রমিকরা শহরের বঙ্গবন্ধু চত্বরে জমায়েত হন। তাঁরা গভীর রাত পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সড়ক (রংপুর রোড) অবরোধ করে রাখে।

এ সময় সড়কটিতে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে অবরোধকারীরা সড়ক থেকে সরে দাঁড়ান। তবে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ ঘোষনা করেন। ফলে সমিতির আওতাধীন প্রায় ৬০ টি হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ রয়েছে। 

সৈয়দপুর হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সখেন ঘোষ জানান, হোটেল শ্রমিককে মারধর এবং হোটেল মালিককে হুমকির প্রতিবাদে সৈয়দপুর হোটেল মালিক সমিতি ও হোটেল শ্রমিক সংগঠনের যৌথ ঘোষণায় হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকবে অনির্দিষ্টকালের জন্য। ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত হোটেল খোলা রাখলে মালিক সমিতি ও হোটেল শ্রমিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে পিকআপ শ্রমিক ও মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করে যোগাযোগ না হওয়ায়  তাদের মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে নীলফামারী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মমতাজ আলী বলেন, হাতাহাতির ঘটনা দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি মিমাংসার জন্য আহবান জানালেও হোটেল মালিক ও শ্রমিকরা সমঝোতা না করে উল্টো প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সৈয়দপুরবাসীকে জিম্মি করেছে।

পিকআপ ও মাইক্রো শ্রমিকরা যথারীতি কাজে যোগ দিয়েছে। হোটেল বন্ধ করায় হোটেল শ্রমিকরাও ভোগান্তিতে পড়েছে। পিকআপ শ্রমিক জাহান আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। তার বিরুদ্ধে মামলা তুলে না নিলে আমরাও আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে হোটেল মালিক শ্রমিকরা দায়ী থাকবেন।

ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সমাধানের চেস্টা চলছে। শনিবার সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) সারোয়ার আলম ও ওসি তদন্ত মফিজুল হক শহরের পুলিশ বক্সে বসেছিলেন। তাতে হোটেল মালিকরা হোটেল খুলতে সম্মত হলেও শ্রমিকরা মেনে না নেয়ায় কোন সমাধান হয়নি। রাত ৯ টায় উভয়পক্ষকে নিয়ে আবার বসা হবে।