- মাধুকর প্রতিনিধি
- তারিখঃ ৩-১২-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৫:১৯
সৈয়দপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ গেল ব্যবসায়ীর
সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি►
নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেল লাইন পার হতে গিয়ে চলন্ত ট্রেনে কাটা পড়ে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ২ টায় শহরের রেলওয়ে বাজারে বাবু আলী ডাল মিল সংলগ্ন পৌর পাবলিক টয়লেট এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। মৃত ব্যক্তির নাম জায়েদ হোসেন খান চঞ্চল (৬৪)।
তিনি একজন পিতলের তৈজসপত্র ব্যবসায়ী। শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে নিরিবিলি হোটেলের পাশে তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স খান স্টোর। পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়া মহল্লার নুরুল আজিম লেনে তাঁর বাসা। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে।
জায়েদ হোসেন খান নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী খান বাহাদুর নবাব পরিবারের সন্তান। তাঁর বাবা মরহুম শহীদ আবেদ আলী খান। যিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। তাঁর অধিকাংশ আত্মীয় স্বজন আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া সহ বহির্বিশ্বের নাগরিক। তাঁর একমাত্র মেয়েও আমেরিকা প্রবাসী।
জানা যায়, মৃত জায়েদ হোসেন খানের শ্রবণ সমস্যা ছিলো। তিনি কানে শুনতে পারতেন না। নিয়মিত হিয়ার এইড মেশিন ব্যবহার করতেন। প্রতিদিনের মত দুপুরের খাবারের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় যাচ্ছিলেন। এসময় মধ্যবর্তী রেললাইন পার হওয়ার প্রাক্কালে পার্বতীপুর থেকে রাজশাহী হতে চিলাহাটি গামী তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেন এসে পড়ে। কিন্তু তিনি তা দেখেননি ও শুনতেও পাননি। ফলে ট্রেনে কাটা পড়ে দ্বিখণ্ডিত হয়ে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেন আসাবস্থায় তিনি রেললাইন পার হতে যাওয়ার সময় লোকজন দেখতে পেয়ে চিৎকার করে তাঁকে থামানো বা সচেতন করার চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি শুনতে পারেননি এবং মুহূর্তে দূর্ঘটনায় পতিত হন। পরে খবর পেয়ে নিহতের ছেলেসহ আত্মীয় প্রতিবেশী ও পরিচিত জন এবং সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার পুলিশ উপস্থিত হয়।
এদিকে এই ঘটনার পরই রেললাইনের দুই পাশের সব দোকান পাট বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা ভয়ে পালিয়ে যায়। এই রেললাইনে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তারপরও রেললাইন ঘেষে দোকান তৈরী করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ব্যবসা করা হচ্ছে। এমনকি লাইনের উপর অসংখ্য অস্থায়ী দোকান বসছে। রেল পুলিশ ও কিছু অসাধু ব্যক্তির যোগসাজশে বছরের পর বছর ধরে এই অবৈধ কারবার চলছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ শাকিউল আজম বলেন, পরিবার ও এলাকার দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের অনুরোধে মানবিক দিক বিবেচনায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এব্যাপারে একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে।