- মাধুকর প্রতিনিধি
- তারিখঃ ১২-৫-২০২৫, সময়ঃ সকাল ১১:৫০
সুন্দরগঞ্জে এডিপির ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
তিস্তা আকন্দ, সুন্দরগঞ্জ►
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ১৩টি প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করে ভুয়া কমিটির মাধ্যমে ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে তা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গাইবান্ধা জেলা পরিষদের গত ২০২৩-২০২৪ ও ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের এডিপির সাধারণ বরাদ্দের আওতায় গৃহীত ওইসব প্রকল্প।
গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক বরাবর হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ফারুকুল ইসলাম ফারুকের বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেন বর্তমান পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।
জানা গেছে, সাবেক ইউপি সদস্য ফারুকের সাথে জেলা পরিষদের গোপন আতাত ছিল। সেই সুবাদে ফারুক হরিপুর ইউনিয়নের ১৩টি প্রতিষ্ঠানের নামে উন্নয়ন প্রকল্প দাখিল করে ২৫ লাখ টাকা রবাদ্দ নেন। অথচ ওইসব প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কমিটির সদস্যরা প্রকল্পের বরাদ্দের কথা বলতে পারেন না। ফারুক ভূয়া প্রকল্প কমিটি তৈরি করে তাদের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আত্বসাত করেন। বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ প্রকল্প সমুহের তালিকা উদ্ধার করে ওইসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও কমিটির সাথে যোগাযোগ করলে তারা প্রকল্পের কথা বলতে পারেন না। প্রকল্প সমুহ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি ইউনিয়ন পরিষদের।
প্রকল্প সমুহ হচ্ছে- হরিপুর ঈদগাহ মাঠ জামে মসজিদ উন্নয়ন প্রকল্প, ইউনিয়ন পরিষদ জামে মসজিদ, গেন্দুয়া মৌজা জামে মসজিদ, ব্যাপারী পাড়া জামে মসজিদ, কঞ্চিপাড়া জামে মসজিদ, রাঘব জামে মসজিদ, গেন্দুরাম মঞ্জু মিয়ার বাড়ী জামে মসজিদ, রাঘব ফকিড়পাড়া জামে মসজিদ, তেলিপাড়া মসজিদ উন্নয়ন, তেলিপাড়া কালভাট মেরামত, তেলিপাড়া কবরস্থান, হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও হরিপুর বেগম রোকেয়া মোমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়।
রাঘব জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, তিনি প্রকল্পের ব্যাপারে কিছু জানেন না। কোন দিন কেউ তার নিকট থেকে কোন কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়েও যায়নি। মসজিদের টাকা যারা আত্নসাত করেন, তারা মুসলিম দাবি করতে পারেন না। তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হৃদয় কুমার সরকার বলেন, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে তার প্রতিষ্ঠানে কোন প্রকল্পের কাজ হয়নি। এ সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
সাবেক ইউপি সদস্য ফারুকুল ইসলাম ফারুকের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের তালিকা মোতাবেক প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সরেজমিন গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোন কাজ হয়নি। এমনকি প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কমিটি প্রকল্পের ব্যাপারে কিছু জানেন না। প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৪টি প্রকল্পের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। জেলা প্রশাসক কথা দিয়েছেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবেন।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, তিনি সবেমাত্র এই উপজেলায় যোগদান করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ বলেন, অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।