- মাধুকর প্রতিনিধি
- তারিখঃ ২৮-১২-২০২২, সময়ঃ বিকাল ০৩:১৫
শাক-সবজি’র বীজ বিক্রি করে লাভবান আল-আমিন
এস এম রাফি, চিলমারী ►
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে আল-আমিন নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী প্রতি মাসে এখন আয় করেন প্রায় ২০ হাজার টাকা। অভাব অনটনের মধ্যে দিনাতিপাত করা সেই আল আমিন এর ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে শাক সবব্জির বীজ বিক্রি করে। এক সময় বাবার ক্ষুদ্র ফলের ব্যবসায় হাল ধরেছিলো এই আল আমিন। আর্থিক টানা পেপাড়ানের মধ্যে ছোট দুই বোনের বিয়ে দিয়ে অনেকটাই আর্থিকভাবে ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছিলেন আলআমিনের পরিবার। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও পরার্মশ নিয়ে এখন সেই আল আমিনের প্রতি মাসে প্রায় ২০ হাজার টাকা আয় করছেন শুধু বীজ বিক্রি করে।
উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের সরকারপাড়া গ্রামের মোঃ পঞ্চু ব্যাপারীর ছেলে মোঃ আল-আমিন। পিতামাতা, স্ত্রী এবং এক মেয়েসহ পাঁচ সদস্যের সংসার। আল আমিনের ছোট দুই বোনের বিয়ে হয়েছে।
আলআমিন বলেন, দারিদ্রতার ভারে ডিগ্রী পড়ার সময় পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেনি। পরিবারে একমাত্র ছেলে সন্তান হওয়ার কারণে বাবার সাথে সংসারের হাল ধরতে বাবার ফল ব্যবসায়ে সাহায্য করতাম। প্রাথমিক পর্যায়ে বাবার সাথে স্থানীয় বাজারে ফলের দোকান এর পাশপাশি স্বল্প পরিসরে সবজী বীজও বিক্রয় শুরু করি। তবে, ব্যবসায়ীক জ্ঞান ও দক্ষতা না থাকায় আয় ও ব্যবসায়িক উন্নতি করতে পারেনি। ফলে মাসিক ৪-৫ হাজার টাকা আয় হতো।
তিনি আরো বলেন, পরে আমি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের সর্বাত্বক সহযোগিতায় একটি এনজিও সঙ্গো’র মাধ্যমে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও পরার্মশ নিয়ে নিয়ে পুরো পুরি ব্যবসায় মনোযোগ দেই। উন্নত বীজের ব্যবহার, চাষাবাদ পদ্ধতি, জৈব বালাই নাশক ব্যবহারের উপর বিভিন্ন প্রশিক্ষন করি। পরে আমাকে খামার ব্যবসায়ী পরামর্শক (এফবিএ) হিসেবে বেছে নেন। এরপরে আমি নিজে সেশন পরিচালনা করে বিশ হাজার টাকা আয় করি। বর্তমানে ব্যবসার মূলধন প্রায় ১ লক্ষ টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাসটেইনড অপরচুনিটিজ ফর নিউট্রিশন গভনেন্স (সঙ্গো)ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে আরডিআরএস বাংলাদেশ ও কর্ডএইড কর্তৃক যৌথভাবে বাস্তবায়িত প্রকল্পের মাধ্যমে “নেটওয়ার্কিং, লিংকেজ, প্রাইভেট সেক্টর শব্দগুলোর সাথে পরিচিত বা তাৎপর্য সম্পর্কে পূর্বে ধারণা না থাকলেও ; বর্তমানে এ বিষয়ে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে ক্ষূদ্র খামারীদের ব্যবসায়িক বিষয়ে দক্ষতা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে।
‘সঙ্গো’ প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী মোঃ আহসানুল কবির বুলু বলেন, বসত বাড়ীতে সবজী উৎপাদন বৃদ্ধি করতে গুনগত বীজ ব্যবহার এবং যথাযথ পরামর্শ একটি বড় বিষয়, বীজ ও পরামর্শ সঠিক সময়ে হাতের কাছে পাওয়া এবং উৎপাদিত সবজী, ফল পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে যাতে বাড়ীতে বসেই অতিরিক্ত সবজী ও ফল বিক্রয় করে পরিবারের আয় বৃদ্ধি করা, পাশাপাশি ভাল বীজ, চারা বিক্রয় এবং উৎপাদিত সবজী ও ফল ন্যার্য মূল্যে কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করে বাজারে বিক্রয় করে সেখান থেকে আয় বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই মূলত প্রকল্পে খামার ব্যবসায়ী পরামর্শক (এফবিএ) মডেল তৈরি করা হয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কুমার প্রণয় বিষাণ দাশ বলেন, আমরা বিভিন্ন ভাবে ক্ষুদ্র থেকে সব ধরণের ব্যবসায়ীদের পরার্মশ সহ বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করে আসছি। এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থাও কাজ করে যাচ্ছে।