• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৮-১১-২০২২, সময়ঃ সকাল ০৮:৫৫

রাণীনগরে মেঠোপথের আধুনিকায়নের অভাবে থমকে আছে উপশহর এলাকার সার্বিক উন্নয়ন



আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ ► 

নওগাঁর রাণীনগরে গড়ে ওঠা উপশহর এলাকায় মাত্র একটি মেঠোপথে আধুনিকতার ছোঁয়া আর একটি ব্রিজের অভাবে থমকে আছে ওই এলাকার অবকাঠামোগত সকল উন্নয়ন। উপজেলা থেকে রেলগেটে আসার বাইপাস সড়কের উপর চাপ কমাতে উপশহরের এই মেঠোরাস্তাটি দ্রæত আধুনিকায়ন করার কোন বিকল্প নেই। 

ইতিমধ্যেই এই রাস্তার দক্ষিণ দিকে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য প্রাথমিক ভাবে প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা তৈরি হয়েছে অনেক আগেই। শুধুমাত্র এই মেঠোপথ ও একটি ব্রিজের অভাবে এই এলাকার সার্বিক উন্নয়ন থমকে আছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার একপাশে রাণীনগর মহিলা অনার্স কলেজ। এছাড়াও রাস্তাটির দু’পাশেই গড়ে উঠেছে ডাক্তার, প্রফেসর, শিক্ষকদের জনবসতির মহল্লাসহ খানকা শরীফ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টিএক্স ফাউন্ডেশন, সৃষ্টি মাল্টিমিডিয়া স্কুল, রাণীনগর কেন্দ্রীয় গোরস্থানসহ শতাধিক আবাসিক ও বাণিজ্যিক স্থাপনা। নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে পাকা রাস্তার পাশেই রয়েছে প্রস্তাবিত মসজিদ এতিমখানা ও মাদ্রাসা। আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে কেন্দ্রীয় কবরস্থানের দূরত্ব প্রায় ৫০০ মিটার। তৎকালীন সময়ে এই জনগুরুত্বপূর্ন রাস্তাটির কাজ শুরু করেছিলেন প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম। এরপর বেশ কয়েকবার মাটিকাটা হয়েছিলো রাস্তাটিতে। 

কিন্তু পরবর্তি সময়ে অজানা কারণে রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ আর আলোর মুখ দেখেনি। এই রাস্তাটি চালু হলে খুব সহজেই কবরস্থানে লাশ দাফন, কবর জিয়ারত করাসহ এই মহল্লায় যাতায়াতের সুবিধা বাড়বে, বৃদ্ধি পাবে শহরের আয়তন, কলেজের সৌন্দর্য্য বর্ধক গেইট, প্রতিদিন শরীর চর্চাসহ বিকেল বেলার বিনোদন কেন্দ্র হিসেবেও এই রাস্তাটিকে ব্যবহার করতে পারবেন স্থানীয়রা। এতে করে নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়ক হতে রাণীনগর উপজেলা মুখি বাইপাস রাস্তার উপর থেকে একদিকে চাপ কমবে অপরদিকে ব্যস্ততম রেলগেট চত্বরে যানজট ও দুর্ঘটনার আশঙ্কাও কমে আসবে। তাই আগামী প্রজন্মের জন্য আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পন্ন একটি স্বাস্থ্যসম্মত পরিকল্পিত সবুজ নগরী গড়ে তুলতে উপশহর এলাকার এই রাস্তাটি আধুনিকায়ন করার কোন বিকল্প নেই বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

উপশহর এলাকার সৃষ্টি মাল্টিমিডিয়া স্কুলের পরিচালক অধ্য হারুন-অরÑরশিদ জানান, এই মেঠোপথটি আধুনিকায়ন হলে বাইপাস সড়কের উপর চাপ কমবে। কমবে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা। মরদেহ খুব সহজেই গোরস্থানে আনা, শত শত শিক্ষার্থীদের খুব সহজেই কলেজ কিংবা স্কুলে আসাসহ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচল আরো অনেক সহজ হবে। রাস্তার দুই পাশে গড়ে উঠবে নতুন নতুন স্থাপনা আর সৃষ্টি হবে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের। কারণ আধুনিকমানের যোগাযোগ ব্যবস্থাই কোন স্থানের মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা অর্থনৈতিক চাকাকে চাঙ্গা করে তোলে। তাই এই এলাকার ভবিষ্যৎ উন্নয়নকে আরো ত্বরান্বিত করতে এই একটি ব্রিজসহ এই মেঠোপথের সংস্কারের কোন বিকল্প নেই।  

রাণীনগর মহিলা অনার্স কলেজের অধ্যক্ষ মিরাজুল ইসলাম বলেন, উপশহরের এই মেঠোপথটি আধুনিকায়ন করা এখন সময়ের দাবীমাত্র। এই রাস্তাটি আঞ্চলিক সড়কের সঙ্গে একটি ব্রিজ নির্মাণের মাধ্যমে চলাচলের উপযোগী করা হলে কলেজ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কলেজে যাতায়াত করা যেমন সহজতর হবে পাশাপাশি অন্যান্য পথচারীরা খুব সহজেই এই উপশহরে চলাচল করতে পারবেন। বিশেষ করে এখানে শেখ রাসেল মিনিস্টেডিয়াম নির্মাণ করার আগে এই রাস্তাটিকে আধুনিকায়ন করা জরুরী। বর্তশানে স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁশের সাঁকো দিয়েই চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দেওয়া আছে। ওই ব্রিজ নির্মাণ হলেই রাস্তাটিও পাকাকরন করা হবে। কারণ ব্রিজ ছাড়া রাস্তাটি আধুনিকায়ন করে কোন লাভ হবে না। তাই ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা পাশ হয়ে বরাদ্দ এলেই ব্রিজের সঙ্গে রাস্তাটিরও কাজ শুরু করা হবে।