- মাধুকর প্রতিনিধি
- তারিখঃ ১৪-১০-২০২৪, সময়ঃ সকাল ১০:০৮
বিষাদ-আনন্দে গাইবান্ধায় প্রতিমা বিসর্জন
নিজস্ব প্রতিবেদক►
বিষাদ-আনন্দ এক করে দেবী দুর্গার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আগামী বছরের অপেক্ষায় থেকে দুর্গতিনাশিনী দেবীকে দেবালয়ে বিদায় জানালেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুর থেকে গাইবান্ধা জেলা শহরের ঘাঘট ও আলাই নদীতে নিজেদের ধর্মের রেওয়াজ মতে তেল-সিঁদুর পরিয়ে, পান-মিষ্টি মুখে দিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানাতে ভক্ত ও অনুসারীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। ঢাকের তালে নেচে-গেয়ে নদীর ঘাটে প্রতিমা নিয়ে আসেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারও জেলা শহরের ঘাঘট ও আলাই নদীর তীরে তেল-সিঁদুর পরিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানাতে ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে আসছেন ভক্ত-অনুরাগীরা। ধীরে ধীরে ভিড় বাড়তে থাকে নদী পাড়ে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর মানুষও প্রতিমা বিসর্জন দেখতে ভিড় করতে থাকে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্র জানায়, এ বছর জেলার সাত উপজেলা ও চারটি পৌরসভায় ৫৬১টি মন্দির ও মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরমধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৯৫টি, সুন্দরগঞ্জে ১১৫টি, সাদুল্লাপুরে ৯৫টি, পলাশবাড়িতে ৫৮টি, গোবিন্দগঞ্জে ১২৭টি, সাঘাটায় ৫৮টি এবং ফুলছড়িতে ১৩টি মন্দির ও মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হয়। তবে এ বছর গাইবান্ধায় মণ্ডপের সংখ্যা কমেছে। গত বছর জেলায় ৬৩০টি মন্দির ও মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে এ বছর কমেছে দুর্গাপূজার মণ্ডপের সংখ্যা। এবার জেলায় ৬৯টি কমে ৫৬১টি মন্দির-মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সনাতন ধর্ম মতে, আজ দশভুজা দেবী দুর্গা মর্ত্যলোক ছেড়ে স্বর্গ শিখর কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে গেলেন। তবে আবারও ভক্তদের কাছে দিয়ে গেলেন আগামী বছর ফিরে আসার অঙ্গীকার। তাই আবারও মর্ত্যলোকে ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় ভক্তরা চোখের জলে দেবীকে বিদায় জানান।
হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, এবার দেবী দুর্গা মর্ত্যে এসেছেন দোলায় চেপে, ফিরেছেন ঘোটকে বা ঘোড়ায়। ওই পালকি বা দোলায় দেবীর আগমন বা গমন হলে ফলাফল হয় মড়ক। যা শুভ ইঙ্গিত নয়। অন্যদিকে দেবীর গমন বা আগমন ঘোটকে হলে ফলাফল ছত্রভঙ্গ হয়। সেই নিরিখে ২০২৪ সালে দেবীর গমন ঘোড়ায় হওয়ায় ফলাফল ছত্রভঙ্গ হতে পারে। শাস্ত্রমতে এই ঘোটকে গমনের ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক এলোমেলো অবস্থাকে ইঙ্গিত করে। এটি যুদ্ধ, বিগ্রহ, অশান্তি, বিপ্লবের ইঙ্গিত দিয়ে থাকে।