- মাধুকর প্রতিনিধি
- তারিখঃ ১০-১১-২০২২, সময়ঃ বিকাল ০৪:১৬
ফুলবাড়ীতে আমন চাষে খরচের তুলনায় দাম পাওয়া নিয়ে চিন্তা
ফুলবাড়ী প্রতিনিধি ►
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আগাম জাতের আমন ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। সে ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কৃষকের উঠান ভরে থাকছে আমনের ঘ্রাণে। মাড়াইয়ে সমানতালে কাজ করছেন নারী ও পুরুষ।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় এ বছর ১৮ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) পর্যন্ত আগাম আমন ধান কাটা হয়েছে ৮৩৫ হেক্টর জমির। প্রতি হেক্টরে চাল আকারে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে হাইব্রিড জাতের ৩ দশমিক ৭৫ এবং উফসি জাতের ২ দশমিক ৯ মেট্রিক টন। কতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে।
মোট চাষের আমন ধান থেকে এবার প্রায় ৫৫ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ তথ্য কৃষি অফিসের। অন্যদিকে কৃষকদের চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এ ধান। কয়েকজন কৃষক বলেছেন, এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদনে তাদের খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা। বর্তমানে ৪০ কেজির প্রতিমণ ধান আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকায়। চাষ, সেচ, সার, কীটনাশক সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আমনের প্রতি বিঘায় ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ বেড়েছে।
ফুলবাড়ী পৌর এলাকার চকচকা গ্রামের আদর্শ কৃষক জিল্লুর রহমান বলেন, ২০ বিঘা জমিতে তিনি আমনের চাষ করেছেন। প্রতি বিঘায় আমন উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। প্রতি বিঘাতে ধান পারেন ১৮ থেকে ২০ মণ। এতে প্রতি মণ ধান উৎপাদনে তার খরচ হয়েছে প্রায় এক হাজার টাকা।
উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়নের চকমামুদপুর গ্রামের কৃষক চন্দন রায় বলেন, আবাদের শুরুতে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমন উৎপাদনে সেচের কোনো বিকল্প ছিল না। জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে সেচ খরচ বেড়েছে। ধানে কিছু পোকাও আক্রমণ করেছিল। তাই কীটনাশকেও বাড়তি টাকা লেগেছে। এতে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। আগাম জাতের ধানের দাম আরেকটু বাড়তি হলে ভালো হতো।
কৃষিশ্রমিক আব্দুল কাদের বলেন, এক বিঘা জমির ধান কেটে কৃষকের উঠানে এনে দিতে সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা মজুরি নিচ্ছেন। তবে এটি শ্রমিকের চাহিদার ওপর নির্ভর করে। যে এলাকায় শ্রমিক যত বেশি, সে এলাকায় মজুরি তত কম।
ফুলবাড়ী পৌরশহরের ধান ব্যবসায়ি রতন চক্রবর্তী বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর কৃষক ধানের দাম বেশি পাচ্ছেন। ব্যবসায়িরা আমনের মোটা ধান প্রতিমণ কিনছেন ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকায়। আর চিকন ধানের দাম সাড়ে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, এবার আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। মোট চাষের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তার চেয়ে বেশি জমিতে চাষ হয়েছে। উৎপাদন ও দাম দুটোই ভালো হয়েছে।