• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২১-১০-২০২২, সময়ঃ বিকাল ০৩:১৯

ফুলছড়িতে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার অভিযোগে মামলা



ফুলছড়ি গাইবান্ধা প্রতিনিধি ►

গাইবান্ধার ফুলছড়িতে মধু মিয়া (৩৬) নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফু্লছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাওসার আলী। বর্তমানে মধু মিয়া গুরত্বর আহত অবস্থায় গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর আগে গত সোমবার বিকেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে। মধু মিয়া পূর্ব উদাখালী গ্রামের লাল মৃত লাল মিয়ার ছেলে। ওই হামলার ঘটনায় মধু মিয়ার আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন, ওই এলাকার দুলা মিয়ার ছেলে লিটন (৪২), মাসুদ মিয়া (৩৮), মিন্টুু মিয়া (৩০), মজিবর রহমানের ছেলে হাদী মিয়া (৪৬), উরফি মিয়া (৩৮), নয়ন মিয়া (৩৫), জেনতি বেগম (৩০)। মজিবর রহমানের স্ত্রী হলিমা বেগম, মৃত মেছের উত্তিনের ছেলে দুলা মিয়া (৬২)। 

মামলার এজাহার সূত্র জানা যায়, পূর্ব উদাখালী গ্রামের মধু মিয়ার সাথে দক্ষিণ উদাখালি গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া (৪২), মাসুদ মিয়া (৩৮) ও  মিন্টু মিয়া (৩০) গংদের পারিবারিক ও জমি নিয়ে পূর্ব থেকেই বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে গত সোমবার এজাহার নামীয় আসামীসহ অজ্ঞাত আসামীরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হাতে লাঠি, ছোৱা, লোহার রড, শাবল এবং অটোবাইক এর লোহার চেইন নিয়ে উদাখালি বাজারের দক্ষিণপার্শ্বে মধু মিয়ার ওয়ার্কশপ এর সামনে এসে তার পরিবারের সদস্যদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এতে মধু মিয়া বাধা-নিষেধ করলে আসামী দুলা মিয়ার হুকুমে সে সহ অন্যান্য আসামীরা অনাধিকারভাবে তার ওয়ার্কশপ (দোকানের) এর ভিতরে প্রবেশ করে তাদের হাতে থাকা লাঠি ও লোহার রড দ্বারা তার বুকে, পিঠে, মাথাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে এলোপাথারীভাবে মারতে থাকে।

আসামীদের হাতে থাকা ধারালো ছোড়া দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথার উপর চোট মারলে মধু মিয়া উক্ত চোট তার হাতদ্বারা ঠেকালে তার ডান হাতের কবজির নীচে লেগে গুরুত্বর রক্তাক্ত হাড়কাটা জখম করে। আসামীরা তাদের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে ডানপায়ের হাটুতে আঘাত করে গুরুত্বর হাড় কাটা জখম করে। আসামী নয়ন ও মিন্টু মিয়ার হাতে থাকা অটোবাইক এর লোহার চেইন দিয়া তার বুকের মাঝখানে এবং পিঠের একাধিক স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে। তার বড় ভাই মোঃ এন্তাজুল ইসলাম তার দোকানের ভিতরে শোরগোল শুনে তাহার বসতবাড়ী হতে আসা মাত্রই আসামীরা তাদের হাতে থাকা পাঠি ও লোহার রড দিয়ে তার ভাই এজাজুল ইসলামের শরীরের বিভিন্নস্থানে এলোপাথারীভাবে মারপিট করে ছেলাফুলা বেদনা দায়ক জখম করে।

আসামী লিটন মিয়া তার হাতে থাকা ধারালো ছোরা দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে তার বড়ভাই এন্তাজুল ইসলাম এর মাথার উপর মাঝখানে স্বজোরে চোট মারিয়া গুরুতর রক্তাক হাড়কাটা জখম করে। তার মুখে স্বজোরে আঘাত করলে উক্ত আঘাতে তার ভাইয়ের উপরের ঠোঁটে ডানপার্শ্বে লেগে গুরুতর ফাটা জখম হয় এবং তার ভাইয়ের উপরের পাটীর সামনের একটি দাঁত এবং নীচের পার্টীর দুইটি দাঁত নড়বড়ে হয়ে যায়। আসামী নয়ন মিয়া তার হাতে থাকা অটোবাইক এর লোহার চেইনদ্বারা তার ভাইয়ের বাম পাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে জোরে পর পর আঘাত করে গুরুতর রক্তজমাট জখম করে। তার  ভাবী মোছাঃ মাজেদা বেগম তার স্বামীকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসলে আসামী রউফসহ অজ্ঞাতনামা আসামীগণ তাদের হাতে থাকা লাঠি ও লোহার রডদ্বারা তার ভাবী মাজেদা বেগম এর বামহাতের একাধিকস্থানে স্বজোরে পর পর আঘাত করে এবং অসৎ উদ্দেশ্যে তার ভাবীর পড়নের কাপড় টানা-হেচড়া করে শ্লীলতাহানী ঘটায়।

এ হামলার ঘটনায় গুরত্বর আহত মধু মিয়াকে প্রথমে ফুলছড়ি উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়। এঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে মধু মিয়া বাদি হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৫/৭ জনকে আসামী করে থানায় একটি এজার দায়ের করেন দায়ের করে। 

ফুলছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ কাওসার আলী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা প্রথমে একটি অভিযোগ পাওয়ার পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাই। যার কারনে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। আসমীদের ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।

অপরদিকে,  একই ঘটনায় মধু মিয়াসহ সাত জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনকে আসামী করে মামলা করেছেন প্রতিপক্ষ লিটন মিয়া।