- মাধুকর প্রতিনিধি
- তারিখঃ ১৩-৫-২০২৫, সময়ঃ সকাল ১১:১১
ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমণে দিশেহারা সাঘাটার কৃষক
জয়নুল আবেদীন, সাঘাটা►
আধাপাকা বোরো ধানে বাদামি (কারেন্ট) পোকার আক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনোভাবেই প্রতিরোধ হচ্ছেনা পোকার আক্রমণ। ফলে ক্ষতির আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কৃষকেরা।
একদিকে জমিচাষ, চারারোপন, সেচ, সার, কীটনাশক ও ধান কাটার মজুরি বৃদ্ধির কারণে এমনিতেই নাভিশ্বাস উঠেছে কৃষকের। এর মাঝেই আবার তাদের স্বপ্নের বোরোধান না পাকতেই মারাত্মক আকার ধারণ করেছে বাদামি (কারেন্ট) পোকার আক্রমণ। যার ফলে কৃষকরা পড়েছে চরম বিপাকে। এই পোকার আক্রমণের কারণে পরিপক্ক ও পাকার আগেই পুরো ধানগাছ ও শীষের ধানগুলো শুকিয়ে সাদা হয়ে যাচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তাদের দৌড়ঝাপ কোনো কাজে আসছে না। ফলে কৃষক একদিকে যেমন মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে অপর দিকে এবার বারো ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে এ উপজেলায়।
সাঘাটা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে মোট ১৪ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় জাতের ৫৭ হেক্টও, হাইব্রিড ৬ হাজার ২৮৮ হেক্টর, উফসী ৭ হাজার ৮৪০ হেক্টর, ইতোমধ্যেই স্থানীয় ও উফসী জাতের বোরোধান কাটা শুরু হয়ে গেলেও হাইব্রিড ধান সবেমাত্র আধাপাকা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় প্রতিবছর বোরো মৌসুমে উৎপাদিত ধানের বড় একটি অংশ আসে তেনাচিড়া নামক মাঠ থেকে। স্থানীয়রা জানান,এই বৃহৎ মাঠে ২০/২৫ ভাগ জমির ধান পেকেছে এবং কাটা শুরু হয়েছে। বাকী জমির ধান এখনো কাঁচা রয়েছে। উপজেলার ঘুড়িদহ গ্রামের কৃষক বাবলু মিয়া জানান,আমি ৫ বিঘা জমিতে হাইব্রিড ধান আবাদ করেছি। ধান কেবল শুরু হয়েছে এমন সময় পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ১ বিঘা জমিতে কারেন্ট পোকার আক্রমণে ধান ক্ষেত পুরোটাই নষ্ট গেছে। কীটনাশক প্রয়োগ করেও পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ হচ্ছে না । পোকার আক্রমণে প্রায় জমির কাঁচা ধান শুকিয়ে চিটা হয়ে গেছে। এতে খরচ উঠানোই কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে কৃষকের। এবার বোরোধান নিয়ে একই হতাশার কথা জানালেন আরও অনেক কৃষক। একই অবস্থা দেখা দিয়েছে উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য কৃষকের বোরোধান ক্ষেতে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ খালেদ মাহমুদ জানান ধানের চারা রোপণের আগেই কিছু ব্যবস্থা নিলে কারেন্ট পোকার আক্রমণ রোধ করা সম্ভব। এর মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্বে চারা রোপণ, আইলের মাঝে বিলি কেটে দেওয়া, যথাযথ সার প্রয়োগ, আগাম ও প্রতিরোধে সক্ষম জাতের চারা রোপণের ব্যবস্থা করা হলে বা কৃষি অফিসের দেয়া পরামর্শ মেনে কৃষক ধানচাষ করলে এত পোকার আক্রমণ হতো না। এরপরেও কৃষি কর্মকর্তাগণ এলাকায় এলাকায় গিয়ে পোকা দমনের পরামর্শ দিচ্ছেন।