- মাধুকর প্রতিনিধি
- তারিখঃ ৩০-৩-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৩:৩২
গোবিন্দগঞ্জে জনপ্রিয় হচ্ছে পোকা দমনে পারর্চিং পদ্ধতি
গোপাল মোহন্ত, গোবিন্দগঞ্জ ►
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে পারর্চিং এর মাধ্যমে ফসলের পোকা দমন পদ্ধতি। বিনা পয়সায় ও কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াই এই পদ্ধতিতে পোকা দমন হওয়ায় উৎপাদিত খাদ্য শস্য যেমন মানব দেহের জন্য নিরাপদ তেমনি ফসলের উৎপাদন ব্যায় কমে আসছে।
যে কারণে কৃষকরা ফসল চাষাবাদে এখন আর আগের মতো কীটনাশক প্রয়োগ না করে পারচিং পদ্ধতিতে পোকা দমন করছে। ফসলি জমিতে ৫ থেকে ৭ গজ দুরত্বে মরা গাছের ডালপালা, বাঁশের কঞ্চি দ্বারা আড় তৈরি করে পাখিদের বসার ব্যবস্থা করে দিতে হয়। পাখি এই আড়ের ওপর অথবা গাছের ডালে বসে পোকা, কীট পতঙ্গ শিকার করার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। সুযোগ বুঝে পাখিরা খাবার হিসেবে ফসলের ক্ষতিকারক পোকা খেয়ে ফেলে এতে প্রাকৃতিক নিয়মেই দমন হচ্ছে ফসলের ক্ষতিকারক পোকা। অন্যদিকে কীটনাশক প্রয়োগ না করায় বন্ধু পোকা রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করছে করছে পারচিং পদ্ধতি।
উপজেলার সাপামারা ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের কৃষক পবন চন্দ্র বলেন, আগে ফসল চাষাবাদের সময় পোকাদমনে কীটনাশক প্রয়োগ করতাম। কিন্তু এখন কীটনাশকের বদলে ধান ক্ষেত সহ অন্যান ফসলি জমিতে পোকা দমনে এখন পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। এতে বেশ সুফল পেয়েছেন তিনি।
নরেঙ্গাবাদের মেরী গ্রামের বাবলু মিয়া বলেন পারচিং পদ্ধতি একটি সহজ কাজ। এতে খুব বেশী টাকা-পয়সা খরচ হয় না। অথচ মাজরা পোকার মথ, পাতা মোড়ানো মথ ও ক্ষতিকারক পোকা সহজেই দমন হয়। এই পদ্ধতিতে ফসলের ক্ষতিকারক পোকার বংশ বৃদ্ধি রোধ করাও সম্ভব। এতে যেমন ফসলের উৎপাদন খরচ কমে যায়, অন্যদিকে ফসলের গুণগত মানও অক্ষুন্ন থাকে।
শিবপুরের কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন অর্থ ব্যয় করেও বাজারের অনেক ভেজাল কীটনাশকের কারণে পোকা দমনে তেমন ফল আসত না। এখন খরচবিহীন, পরিবেশ বান্ধব প্রাকৃতিক ভাবে পোকা দমন হওয়ায় পারর্চিং পদ্ধতি এই এলাকায় বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ বলেন, অন্যান ফসলের পাশাপাশি ধান ক্ষেতে পার্চিং পদ্ধতিতে পোকা দমন খুবই কার্যকর পদ্ধতি। এতে কৃষকরা অতিরিক্ত খরচ ছাড়াই তাদের উৎপাদিত ফসল পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে। পাশপাশি অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগে ফসলের গুনগত মান ক্ষুন্ন হওয়ার হাত থেকেও রক্ষা পায়। পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় পারচিং একটি কার্যকর পদ্ধতি।