• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১০-৭-২০২৩, সময়ঃ দুপুর ০২:৪৫

গাইবান্ধায় সাম্যবাদী আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ



নিজস্ব প্রতিবেদক ►

নিত্যপণ্যের মুল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, সকল কর্মক্ষম মানুষের চাকুরী, শ্রমজীবি-নিম্নআয়ের মানুষের জন্য সারাবছর কাজ ও রেশনের দাবিতে গতকাল সোমবার গাইবান্ধা জেলা শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে শহরের ২নং ট্রাফিক মোড়ে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন গাইবান্ধা জেলা শাখা বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশের আয়োজন করে। 

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরামের সদস্য মনজুর আলম মিঠু, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সমন্বয়ক আশরাফুল আলম আকাশ, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট নেতা জাহিদুল হক, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের জেলা সংগঠক শামিম আরা মিনা প্রমুখ। 

বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর পরেও দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হয়নি। সাধারণ মানুষের জীবনে ভাত-কাপড়-বাসস্থান-শিক্ষা-চিকিৎসার নিশ্চয়তা আসেনি। শোষন-লুটপাটের বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও আদর্শহীন রাজনীতির শাসন ও শোষণে গত ৫১ বছরে দেশে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, সন্ত্রাস, ঘুষ-দুর্নীতি-লুটপাট, বেকারগ্রস্থ সংস্কৃতি, মাদকের ছড়াছড়ি, সবকিছু মিলে মানুষ এখন দিশেহারা। রাতের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিত্বহীন আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দেশে এক  চূড়ান্ত ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা চালু করেছে।

আন্তঃসারশূন্য শোষক শ্রেণির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ৫ বছর পর পর ভোট দেয়ার যে অধিকার মানুষের থাকে, তাও মহাজোট সরকার ছিনিয়ে নিয়েছে। নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। গুম-খুন-গ্রেফতার-নির্যাতনের মাধ্যমে দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন কালাকানুনের মাধ্যমে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। জ্বালানি তেল, ইউরিয়াসহ সকল সার, বীজ, কীটনাশক সহ সকল কৃষি উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়েছে।

কিন্তু ফসল বিক্রি করতে কৃষক নায্যমূল্য না পেলেও মধ্যে স্বত্বভোগীদের দৌরাত্যে মানুষকে অতিরিক্ত মূল্যে খাদ্য ক্রয় করতে হচ্ছে। চাল-ডাল-মরিচ-পেঁয়াজ-আটা-ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসের মুল্যবৃদ্ধি এবং বর্ধিত বাড়ি ও গাড়ী ভারা এখন শ্রমজীবি-নিম্নআয়ের মানুষের জীবন-যাপন দূর্বিসহ করে তুলেছে। অসংখ্য বেকার কর্মক্ষম মানুষের চাকুরীর প্রয়োজনে নতুন নতুন কলকারখানা প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে দেশের পাটকল, চিনিকলসহ সরকারি শিল্প কারখানা বন্ধ করে বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। 

বক্তারা আরও বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান সংকটের মূল কারণ শোষণ ও বৈষম্যমূলক সমাজ ব্যবস্থা। এই আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার কারণে মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে অঢেল স¤পদ জমা হচ্ছে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেহনতি মানুষের জীবন অন্তহীন সংকটে নিমজ্জিত হচ্ছে। এ অন্যায়-অন্যায্য ব্যবস্থাকে রক্ষা করার জন্যেই ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই শ্রমিক-কৃষক-নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত মানুষের ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনের মাধ্যমে এ ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটিয়ে শোষনহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তারা অবিলম্বে সিন্ডিকেট ব্যাবসায়ীদের গ্রেফতার, নিত্যপণ্য রেশনে সরবরাহসহ সকল কর্মক্ষম মানুষের চাকুরী এবং সকল বয়স্ক-বিধবা-প্রতিবন্ধীদের মাসিক ১০ হাজার টাকা ভাতা নিশ্চিত করারও জোর দাবি জানান।