- মাধুকর প্রতিনিধি
- তারিখঃ ৩০-৫-২০২৩, সময়ঃ দুপুর ০১:৫৩
গাইবান্ধায় বিভিন্ন দাবিতে আদিবাসীদের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক ►
আদিবাসীদের আদিবাসী হিসাবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন ও পৃথক মন্ত্রণালয় গঠণ এবং বাগদাফার্মের তিন সাঁওতাল হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত।
বাদ পড়া জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে আদিবাসীদের আদিবাসী হিসাবে স্বীকৃতি, সমতল আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন ও পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন কর, সরকারি চাকুরীতে আদিবাসীদের কোটা নিশ্চিত কর এবং উচ্চ শিক্ষায় আদিবাসীদের কোটা বাস্তবায়ন কর, গাইবান্ধা জেলার সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার চাই, রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সেচের পানি না পাওয়ায় অভিনাথ মার্ডি ও রবি মার্ডির আত্মহত্যার প্ররোচণাকারীদের বিচার চাই, সারাদেশে আদিবাসীদের উপর নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, জমি জবর দখল, মিথ্যা মামলা, লুটপাট, পুলিশী হয়রানি, আদিবাসীদের নামে বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ, ভূমি অফিসের ঘুষ-দূর্নীতি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে আদিবাসীরা।
এরপরিপ্রেক্ষিতে আজ ৩০ মে দুপুর ১২টয় গাইবান্ধা গানাসাস মার্কেটের সামনে ডিবি রোডে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, গাইবান্ধার উদ্যোগে ও সুফল হেমব্রমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ গাইবান্ধা শাখার সহ-সভাপতি সুফল হ্যামব্রম, স্ত্রেরিনা, তৃষ্ণা মুরমু, বিটিস সরেন, তারামনি সরেন, মইনুলন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, "এই ভূখ-ের অদিবাসী হিসেবে হাজার বছর ধরে আমরা বসবাস করছি এবং ন্যায্য অধিকারের জন্য লড়াই করছি। ব্রিটিশ শাসনামলে আমরা লড়েছি স্বাধীনতার জন্য, পাকিস্তান শাসনামলে আমরা লড়েছি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, ভাষা ও স্বাধীনতার জন্য। দেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও সম্পত্তির জন্য এখনও আন্দোলন করতে হচ্ছে। বাংলাদেশে ৫০ এর অধিক জাতিগোষ্ঠী বসবাস করে। তাদের ভাষা, সংস্কৃতি, জীবনযাপন পদ্ধতির মধ্যে যেমন মিল আছে তেমনি কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্যও আছে। এই বৈশিষ্ট্যকে মর্যাদার সঙ্গে রক্ষা করা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আমরা দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ারের জন্য সংগ্রাম করে আসছি যার ফলে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি এই তালিকায় অনেক জাতিগোষ্ঠীর নাম বাদ পড়েছে। এই ভূখ-ে বংশ পরম্পরায় বসবাস করেও আমাদেরকে তালিকাভুক্ত না করা শুধু দুঃখজনক নয়, প্রশাসনিক দায়িত্বহীনতাও বটে। ফলে তালিকা সংশোধন করে বাদ পড়া জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। আদিবাসী জনগোষ্ঠী তাদের সরলতার কারণে বারবার প্রতারিত হয়েছে। তাই কখনো তারা আন্দোলন করছে তাদের পিতৃপুরুষের ভূমি রক্ষার জন্য, কখনো জীবন দিচ্ছে সেচের পানির জন্য, কখনো জীবিকা ও কর্মসংস্থানের দাবিতে রাজপথে নামছে, কখনো লড়ছে শিক্ষা ও চাকুরির জন্য আবার নির্যাতন ও লাঞ্চনার বিরুদ্ধেও সংগ্রাম করতে হচ্ছে তাদেরকে।
এই লড়াই সংগ্রাম করতে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়েছেন আলফ্রেড সরেন, ঢুডু সরেন, নরেন্দ্রনাথ মুন্ডা। যাদের হত্যার বিচার আজও হয়নি। উত্তরবঙ্গের বিশেষত সমতলের আদিবাসীদের সংগঠিত করে আন্দোলন করছি আমরা। এই আন্দোলন সংগ্রামে আমরা গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল দল ও ব্যক্তিদের সমর্থন পেয়েছি। আগামী দিনের সংগ্রামেও আমরা সকলের সমর্থন সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।"