• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৩১-৩-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৪:৪২

গাইবান্ধায় বাসন্তী পুজা অনুষ্ঠিত



নিজস্ব প্রতিবেদক ►

পৃথিবী থেকে সমস্ত অন্যায় অবিচার দূরীভূত করতে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গাইবান্ধা শহরের কলেজপাড়া, ডেভিড কোম্পানি পাড়া, ভি,এইডরোড কালিবাড়ী পাড়ায় উদযাপিত হচ্ছে বাসন্তী পুজা। তবে বিশেষ করে  শহরের কলেজপাড়ার সনাতন সংঘ দুর্গা মন্দিরে জমজমকপূর্ণ বেশি। চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে বাসন্তী পুজা উদযাপিত হয়ে থাকে।

বাঙালির আদি দুর্গাপুজো হলো বাসন্তী পুজা। ষষ্ঠী পুজার মধ্য দিয়ে বাসন্তী পুজা শুরু হয়। ঢাক, কাসর আর উলুধ্বনির শব্দে মুখরিত হয়ে উঠে পুজা মন্ডবগুলো। ২৯ মার্চ বৃহস্পতিবার নবমী পূজা অনুষ্ঠিত হয় ও ভক্তদের মাঝে খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণ করা হয়। শুক্রবার দশমী পুজার মধ্য দিয়ে  বাসন্তী পুজার সমাপ্তি ঘটবে।

বাসন্তী পুজায় ভক্তপ্রান দাদা ও মায়েরা তাদের মনবাসনা পুরনে উপবাস  থেকে সকালে মায়ের চরনে পুস্পাঞ্জলি প্রদান করেন ও পুজা শেষে চরনামৃত ও ফল প্রসাদ খেয়ে উপবাস ভাঙ্গেন। শুধু তাই নয় বাসন্তী পুজা দেখতে বিভিন্ন পাড়া মহল্লার সনাতনধর্মাবল্মীরা পরিবার পরিজন নিয়ে মন্ডব ঘুরে পুজা দর্শন করেন।

"কলেজপাড়া সনাতন সংঘ দুর্গা মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক বিমল চন্দ্র দাস" বলেন- বাসন্তী দেবী মুলত প্রকৃত দুর্গাপূজা।বাসন্তী পুজাই দুর্গার প্রকৃত রুপ। যদিও এখন আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের দুর্গাপুজোই বেশি আড়ম্বরে পালিত হয়।
এখন যতই আমরা আশ্বিন মাসে দুর্গাপুজো করি না কেন, বাঙালির আদি দুর্গাপুজো হত এই চৈত্র মাসেই।

তিনি বলেন- সুরথ সুশাসক ও যোদ্ধা হিসেবে বেশ খ্যাত ছিলেন। কোনও যুদ্ধে নাকি তিনি কখনও হারেননি। কিন্তু প্রতিবেশী রাজ্য একদিন তাঁকে আক্রমণ করে এবং সুরথ পরাজিত হন। এই সুযোগে তাঁর সভাসদরাও লুটপাট চালায়। কাছের মানুষের এমন আচরণে স্তম্ভিত হয়ে যান সুরথ। বনে ঘুরতে ঘুরতে তিনি মেধাসাশ্রমে পৌঁছোন।

ঋষি তাঁকে সেখানেই থাকতে বলেন। কিন্তু রাজা শান্তি পান না। এর মধ্যে একদিন তাঁর সমাধির সঙ্গে দেখা হয়। তিনি জানতে পারেন, সমাধিকেও তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।

তাঁরা দুজনেই তখন ভাবলেন, যাদের কারণে তাদের সব কিছু হারিয়েছে,  ঋষিকে একথা বলায়, তিনি বলেন সবই মহামায়ার ইচ্ছা। এরপর ঋষি মহামায়ার কাহিনি বর্ণনা করেন। ঋষির উপদেশেই রাজা কঠিন তপস্যা শুরু করেন। সমাধি নামক বৈশ্যেরসঙ্গে মিলে রাজা সুরথ বসন্তকালে ঋষি মেধসের আশ্রমে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। পরে মহামায়ার আশীর্বাদ পেতেই বসন্ত কালের শুক্ল পক্ষে রাজা, পুজো শুরু করেন। শুরু হয় বাসন্তী পুজো। পরবর্তীতে কালের প্রবাহে বিভিন্ন প্রজারা সুষ্ঠ সময়ে করার জন্য এটা শরৎকালে নিয়ে যায়। বাসন্তী দেবী দুর্গারুপে আবহন করে।

তিনি আরও বলেন-২৭ বছর হলো এই মন্দিরে দূর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সে সাথে দুই বছর হলো বাসন্তী পুজা উদযাপিত হচ্ছে। এটার প্রকৃত উদ্দেশ্য দেবী মর্ত্যে আগমন করুন। এতে করে পৃথিবী থেকে  সমস্ত অন্যায় অবিচার দূরীভূত হবে এবং পৃথিবীর সকল মানুষকে আর্শীবাদ করুক যাতে সুখে শান্তিতে সবাই মিলে বসবাস করতে পারে। এতে করে মার আরাধনা করতে পারব।