• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৪-২-২০২৩, সময়ঃ রাত ০৭:৪৬

গরিবের ব্রয়লার ধনির পেটে, হতাশায় মধ্যবিত্ত



নিজস্ব প্রতিবেদক ►

গাইবান্ধার বাজারে সবচেয়ে কম দামের মাংস খ্যাত ব্রয়লার মুরগি। আর গরু-ছাগলের মাংস সবার প্রিয় হলেও আকাশচুম্বি দামের কারণে নিম্নআয়ের মানুষেরা এর স্বাদ নিতে পারতেন না। একারণে তারা ব্রয়লার মুরগি ক্রয় করতেন। তাই ব্রয়লার মুরগিকে গরিবের মাংস হিসেবে অখ্যা দিতেন অনেকে। কিন্তু একমাসের ব্যবধানে সেই ব্রয়লারের দাম কেজিতে বেড়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। যার ফলে এ মাংসও যেন হারাম হচ্ছে গরিব মানুষদের। একই সঙ্গে মধ্যবিত্তরাও এখন চড়া দামে ব্রয়লার কিনতে হতাশায় ভুগছেন। আর এখন ব্রয়লার মুরগি কিনছেন ধনিরা। 

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ব্রয়লারসহ অন্যান্য জাতের মুরগির উর্ধগতি দামের চিত্র। অস্বাভাবিক দামের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছেন ভোক্তারা। বর্তমান বাজারে ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২২০ টাকা দামে। অথচ একমাস আগে এর দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। শুধু ব্রয়লারেই নয়, বাজারে প্রতিকেজি সোনালী মুরগি ৩০০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ টাকা, গরু মাংস ৬৬০ টাকা ও ছাগলের মাংস ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দিনদিনে সব ধরণে নিত্যপণ্যসহ মুরগির অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়ায় হতাশ হচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত্ব পরিবারের মানুষেরা। এখন অনেকে ক্ষুব্ধ হয়ে বলছেন ব্রয়লার মুরগির দাম অস্বাভাবিক কারণে তারা মাংস খাওয়া ছাড়বেন। 
   
গাইবান্ধার পুরাতন বাজারে ব্রয়লার মুরগি কিনতে আসা নজরুল ইসলাম নামের এক রিকশাচালক বলেন, আয়-রোজগার কম হওয়ায় মাসেও একদিনও মাংস খেতে পারি না। তবে বাড়িতে আতœীয়-স্বজন আসলে কম দামে ব্রয়লার মাংস কিনতাম। কিন্তু দাম বেড়ে যাওয়া এখন তাও কেনা সম্ভব নয়। জমির উদ্দিন নামের এক দিনমজুর ব্যক্তি বলেন, গত কোরবানী ঈদে অন্যের দেওয়া মাংস খেয়েছিলাম। এরপর থেকে আর স্বাদ নিতে পারিনি। পরিবারের আবদারে আজ বাজারে ব্রয়লার মুরগি কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু বেশী দামের কারণে কেনা হলো না। আমাদের পেটে আর কখনো গোশত ঢুকবে না। 

সাদুল্লাপুর বাজারে আসা মেহেদুল আলম নামের এক কৃষক বলেন, আগে মাসে এক-দুদিন গরু-ছাগলের মাংস খাওয়া হতো। এরই মধ্যে এসব মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় তা খাওয়া বাদ দিয়েছি। ফের ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধিতে এটাও এখন খাওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।  
 
সাদুল্লাপুর বাজারের মুরগি বিক্রেতা জহুরুল ইসলাম জানান, গত দুই সপ্তাহ থেকে ব্রয়লারসহ অন্যান্য মুরগির বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। ইদানিং এই মাংস কিনছেন ধনিরা। আর সাধারণ মানুষ দাম শুনে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। এতে করে লোকসানের শিকার হতে হচ্ছে। পোল্ট্রি খামারি খাজা মিয়া বলেন, বাচ্চা-ফিড-ওষুধ ও অন্যান্য জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়া অধিকাংশ খামার বন্ধ হয়েছে। তাই মানুষের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন হচ্ছে কম। এ কারণে দাম বেড়েছে অনেকটা। তবুও খামার ব্যবসায় ভাটা পড়ছে। গাইবান্ধা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুস ছালাম তালুকদার বলেন, মুরগিসহ সব ধরণে খাদ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে নজদারি রাখা হয়েছে। এ নিয়ে অভিযানও করা হচ্ছে।