• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১০-১১-২০২২, সময়ঃ দুপুর ০২:০১

ঐতিহ্যকে আঁকড়ে ধরে এখনো তৈরি করে চলছেন বাঁশের পণ্য



নিজস্ব প্রতিবেদক ►

হামিদা, ইউনুস ও মমিনা। আরো আছে অর্ধশত নারী-পুরুষ। সবাই বাঁশের পণ্যের কারিগর। প্লাষ্টিক কিংবা সিলভার পণ্যের কাছে হার না মানা ব্যক্তি তারা। বাঙালীর পুরোনো ঐতিহ্যকে আঁকড়ে ধরে এখনো তৈরি করে চলছেন বাঁশের পণ্যসামগ্রী। আর এসব পণ্য বিক্রি করেই সংসার চলছে তাদের।

সম্প্রতি গাইবান্ধার জামালপুর-ফরিদপুর ইউনিয়নের চিকনী ও উত্তর ফরিদপুর গ্রামের দেখা হয় এই কারিগরদের। তারা নিজ বাড়ির উঠানে আপন খেয়ালে আর নিপুন হাতের ছোয়ায় তৈরি করছিলেন বাঁশের নানা পণ্য।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের নিম্নবিত্ত্ব প্রায় ২৫টি পরিবার কয়েক যুগ ধরে বাঁশশিল্পের কাজ করে আসছেন। তৈরি করেন-খোঁচা, দারকি, খলই, ডুলি, ডালি, কুলা, ঢাকি, পলো, ঢালা, চালুন, ঝুঁড়ি, চাটাই প্রভৃতি জিনিসপত্র। আর এসব পণ্যসামগ্রী তৈরি করে এবং তা স্থানীয় হাট-বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এক সময়ে বাঁশের পণ্যের কদর ছিল অনেকটাই। যার ফলে সেগুলো বিক্রি করে ভালোভাবেই সংসার চলছিল এই পরিবারদের।

ধারাবাহিকতায় আধুনিকতার ছোঁয়ায় ওইসব পণ্যসামগ্রীর চাহিদা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। বাশেঁর পণ্যের স্থলে পাষ্টিক-সিলভার পণ্যের ব্যবহার বেড়ে যায়। তবুও মনোবল হারায়নি তারা। হারাতে দেবেন না গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। সেই সঙ্গে এ পেশা দিয়েই সংসার চালাবেন, এমন দৃঢ মনোবল নিয়ে এখনো তৈরি করে চলছেন বাঁশের পণ্যসামগ্রী। এ দিয়েই মোটামুটি সংসার চলছে তাদের।
কারিগর ইউনুস আলী জানান, বাঁশের পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া আশপাশের অনেক পরিবারে এ পেশাটি ছেড়ে দিয়েছেন। এখনো ছাড়েন নি তিনি। স্থানীয়ভাবে বাঁশ সংগ্রহ করে এবং তা দিয়ে তৈরিকৃত পণ্য হাট-বাজার-গ্রামে গিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। এটি দিয়ে যা লাভ হয়, সেটি দিয়ে পরিবার পরিজনের মৌলিক চাহিদা মেটানোর চেষ্টা রয়েছে তার।

হামিদা বেগম নামের আরেক কারিগর বলেন, সরকারি-বেসরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে এ শিল্পকে ধরে রাখা সম্ভব। ফলশ্রুতিতে কমানো যেতে পারে বেকার সমস্যা। একই সঙ্গে গ্রামীণ নারীদেরও সৃষ্টি হতে পারে কর্মসংস্থান।  

গাইবান্ধার এনজিও কর্মী মেহেদী হাসান বলেন, তাদের তৈরি বাঁশের পণ্যগুলো বেশ দৃষ্টিনন্দন। গুণগত মানও অনেক ভালো। এই মানুষগুলোকে সহযোগিতার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।