• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৮-১১-২০২২, সময়ঃ সকাল ১০:১২

আধুনিক কৃষি যান্ত্রিকরনের দিকে ঝুঁকছে রাণীনগরের কৃষকরা



আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ  ►

নওগাঁর রাণীনগরে দিন দিন আধুনিক কৃষি যান্ত্রিকরনের দিকে ঝুঁকছে কৃষকরা। শ্রমিক সংকট দূর করতে, স্বল্প সময়ে জমি চাষ করতে, জমিতেই ফসল বিশেষ করে ধান কাটা-মাড়াই ও সময়-খরচ বাঁচাতে প্রতিবছরই সরকারের পক্ষ থেকে ভ’র্তকিতে প্রদান করা হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন নানা ধরনের কৃষি যন্ত্র। আর এই কৃষি যন্ত্রগুলো ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছেন কৃষকরা আর সফল হচ্ছে সরকারের গৃহিত কৃষিকে আধুনিকায়ন করার গৃহিত কর্মসূচি। 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বছরের প্রতি মৌসুমে সরকারের পক্ষ থেকে ভ’র্তকিতে সিডার পাওয়ার ট্রেলার, হার্ভেস্টার মেশিন, গার্ডেন ট্রেলার, ধান মাড়াইয়ের মেশিনসহ নানা ধরনের কৃষি যন্ত্রগুলো প্রদান করা হচ্ছে। পুরাতন চাষাবাদকে থেকে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কৃষিতে দেশের কৃষকদের যুক্ত করতে সরকারের এই পদক্ষেপ দারুন ভাবে প্রভাব ফেলেছে। এই কৃষি যান্ত্রিকরণের কারণে কম সময়ে ও কম খরচে চাষাবাদের পাশাপাশি ফলনও বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকগুন। যেসব কৃষকদের কৃষি যন্ত্রগুলো নেওয়ার সামর্থ নেই সেই বিষয়টি সমাধান করার লক্ষ্যে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কৃষি সমবায় সমিতির মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের মেশিনগুলো প্রদান করা হয়েছে। যে কোন কৃষক এই যন্ত্রগুলো ভাড়া নিয়ে তাদের চাষাবাদের প্রয়োজন পূরণ করতে পারছেন। এছাড়াও অল্প জমি চাষের জন্য গার্ডেন ট্রিলার মেশিনটি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক ভাবে সাড়া ফেলেছে। 

উপজেলার রাণীনগর বাজারের টুটুল বলেন, বাগানসহ অন্যান্য ছোট ছোট পরিত্যক্ত জায়গায় বড় পাওয়ার ট্রেলার মেমিন দিয়ে চাষ করা সম্ভব নয়। তাই আমি কৃষি অফিস থেকে একটি গার্ডেন ট্রেলার মেশিন নিয়েছি। মেশিন দিয়ে আমার বাগানসহ ছোট ছোট পরিত্যক্ত জায়গা ইচ্ছে মাফিক চাষ করে এখন বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলাচ্ছি। ওই মেশিন দিয়ে আশেপাশের মানুষেরও চাহিদা পূরন করছি। আমি গার্ডেন ট্রেলার মেশিন নিয়ে অনেক উপকৃত হয়েছি।

উপজেলার রাজাপুর গ্রামের কৃষক হামিদুল হক বলেন, চলতি আমন মৌসুমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য তেমন শ্রমিক খুজতে হয়নি। হার্ভেস্টার মেশিন দিয়ে প্রতি বিঘা জমির ধান ২হাজার টাকা করে কাটা ও মাড়াই করে নিয়েছি। এতে করে আমার খরচ ও সময় অনেক কম লেগেছে। এই সব মেশিন পাওয়াতে আমরা কৃষকরা অনেক ভাবে উপকৃত হচ্ছি। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, আমাদের মূল চালিকা শক্তিই হচ্ছে কৃষি। তাই কৃষিকে পুরাতন পদ্ধতিতে রেখে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। তাই কৃষিকে আধুনিকায়ন করা নিয়ে বর্তমান সরকারের মিশন ও ভিশনকে মাঠ পর্যায়ে শতভাগ বাস্তবায়ন করতে আমরা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। উপজেলার কৃষকদের পুরাতন চাষাবাদ পদ্ধতি থেকে ফিরিয়ে এনে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কৃষি যান্ত্রিকরণের দিকে নিয়ে আসতে চলতি আমন মৌসুমে ভ’র্তকিতে ৫টি সিডার পাওয়ার ট্রেলার মেশিন ৫জন কৃষককে প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়াও ১৪টি গার্ডেন ট্রেলার মেশিন ইতিমধ্যেই বিতরন করা হয়েছে। বর্তমানে এই মেশিনটি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক ভাবে সাড়া ফেলেছে। জমি ফেলে না রেখে একই জমিতে একাধিক ফসলের দ্বিগুন ফলন পেতে এই কৃষি যান্ত্রিকরনের কোন বিকল্প নেই। আমি আশাবাদি একসময় দেশের সকল কৃষকই আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে সকল চাষাবাদ করবেন। এতে করে দেশের কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন তার সঙ্গে সরকারের কোষাগারে জমা হবে দ্বিগুনের চেয়ে বেশি রাজস্ব।