- মাধুকর প্রতিনিধি
- তারিখঃ ১৮-১০-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৪:০১
আত্মসমর্পণের পর কারাগারে দিনাজপুরের পৌর মেয়র
দিনাজপুর প্রতিনিধি►
আদালত অবমাননা দায়ের করা মামলায় দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম দিনাজপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। পরে তাকে দিনাজপুর জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
আজ বুধবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে দিনাজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুলফিকারল্লাহ আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীরা তিনবারের নির্বাচিত মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের মুক্তির দাবিতে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
এর আগে তিনি দলীয় নেতাকর্মী ও তার পক্ষের আইনজীবীদের সাথে করে নিয়ে তিনি দিনাজপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৌঁছেন। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মেয়র সৈযদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এক দেশে দুই ধরনের আইন চলছে । কারন একই আদালত অবমাননা মামলায় অন্যরা ক্ষমা চাইলেই মামলা শেষ হয়ে যায় । আর বিএনপির নেতাকর্মীরা হলে জেল জরিমানা হয়ে যায় । এই হল বর্তমান হাসিনা সরকারের বিচার ব্যবস্থা । এই ধরনের ফারমায়ী আইনের রায় বেশি দিন চলতে পারে না । তিনি আরোও বলেন তারপরও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আত্মসমর্পন করেছি । জরিমানার টাকা আদালতে জমা প্রদান করা হয়েছে ।
উল্লেখ্য, ১২ অক্টোবর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে এক মাসের কারাদন্ড দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে তাকে লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন গ্রহণ না করে এ দন্ড প্রদান করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নের্তৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতি বেঞ্চ। রায়ে তাকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দিনাজপুরের আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। তা না হলে তাকে গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজার রায় নিয়ে আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন পৌর মেয়র। সেই ঘটনায় আদালত অবমাননার আবেদন করেন চার আইনজীবী। আবেদনের পক্ষে শাহ মঞ্জুরুল হক শুনানি করেন।
গত ৩ আগস্ট দিনাজপুরে কেন্দ্রীয় বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচি পালনকালে বক্তব্য দেন পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। বক্তব্যে ওই মেয়র খালেদা জিয়ার মামলায় হাইকোর্টে রায়দানকারী বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করেন। শুধু বিরুপ মন্তব্য করেই তিনি থেমে থাকেননি, বিচারের রায় নিয়েও অবমাননাকর মন্তব্য করেন। মেয়রের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়।
বিষয়টি নজরে আসায় তা আবেদন আকারে আপিল বিভাগে নিয়ে যান মাহফুজুর রহমান রোমানসহ সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী। তারা আবেদনে বলেন, মেয়রের এই বক্তব্য চরম আদালত অবমাননাকর।
গত ১৭ আগস্ট আবেদনটি শুনানির জন্য উত্থাপন করেন সিনিয়র আইনজী শাহ মঞ্জুরুল হক। তিনি বলেন, এভাবে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের একজন বিচারপতি ও মামলার রায় নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য ধৃষ্টতা ছাড়া কিছুই নয়। এটা আপনাদের বিবেচনায় নেওয়া উচিত।
অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ইনায়েতুর রহিম আপিল বিভাগের বিচারক। একজন বিচারপতি সম্পর্কে মেয়র যে ভাষায় গালিগালাজ করেছেন, তাতে কোর্টের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, রায় হয়েছে, তাতে আপিলের সুযোগ রয়েছে। তাই বলে এভাবে বিরুপ মন্তব্য করা যায় না। যদি এ ধরনের ধৃষ্টতার বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে কোর্টের প্রতি জনমনে আস্থার ঘাটতি দেখা দেবে।