- মাধুকর প্রতিনিধি
- তারিখঃ ২৪-৬-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৩:৩৬
সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে অপসারণ করে পুনরায় রোপন করা হলো সেই তালগাছগুলো
নওগাঁ প্রতিনিধি ►
নওগাঁর রাণীনগরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ‘রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ’ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাকা অংশ ঘেঁষে দায়সারা ভাবে রোপন করা তালগাছগুলো অপসারণ করে পুনরায় রোপন করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে অপরিকল্পীত ও নিয়ম বহির্ভুতভাবে সড়ক ও জনপদ বিভাগকে না জানিয়ে সড়কের পাকা অংশ ঘেঁষে গাছগুলো রোপন করা হয়েছিল।
গাছ রোপনে ভবিষ্যতে একদিকে যেমন গাছের ডালপালা বিস্তারে সড়ক সংকুচিত হয়ে দূর্ঘটনার বড় ধরনের আশঙ্কা করা হচ্ছিল অন্যদিকে সড়ক প্রশস্তকরণে চরম বাধার সম্মুখিন হতে হবে এবং গাছ কেটে সড়ক প্রশস্ত করলে সরকারের উদ্দেশ্য ভেস্তে যাবে এমন অভিযোগ উঠলে স্থানীয় ও জাতীয় এবং বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ হয়। এতে সংশ্লিষ্টদের নজরে আসায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে গাছগুলো অপসারণ করে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে পুনরায় রোপন করা হয়েছে। তবে প্রদর্শনীর রোপনকৃত গাছগুলোর ব্যয় বরাদ্দের পরিমাণ জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। অবশ্য জেলা কৃষি কর্মকর্তা বলছেন সংশ্লিষ্ট প্রকল্প অফিস থেকে গাছগুলো কিনে দিয়েছে কৃষি অফিসার শুধু রোপন করেছেমাত্র।
জানা যায়, আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সড়কের দুইপাশে তালগাছ রোপন করা হয়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে গত ১১জুন আনুষ্ঠানিক ভাবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সম্প্রতি পুনরায় পাঁকাকরণের কাজ শেষ হওয়া রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের কালীগ্রাম ডাকাহার নলপুকুর মোড় থেকে সড়কের দুই পাশে চারশতটি তালগাছ রোপনের উদ্বোধন করা হয়।
এতে স্থানীয়রা অভিযোগ তোলেন যে গাছগুলো সম্পন্ন অপরিকল্পীতভাবে রোপন করা হয়েছে। কোথাও সড়কের পাকা অংশ থেকে দেড় ফিট আবার কোথাও দুই/তিন ফিট দুরত্বে রোপন করা হয়েছে। এতে গাছগুলো ধীরে ধীরে যত বড় হবে গাছের ডালগুলোও তত দ্রুত সড়কের পাকা অংশের মধ্যে ছড়িয়ে পরবে। ফলে পাকা সড়ক সংকুচিত হয়ে চলাচলে চরম বাধার সৃষ্টি হয়ে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটবে। এছাড়া সড়কটি কখনো প্রশস্ত করার প্রয়োজন দেখা দিলে গাছ কেটে প্রশস্ত করতে হবে। ফলে প্রকল্পের উদ্দেশ্য চরমভাবে ভেস্তে যাবে।
তাই দ্রুত গাছগুলো অপসারণ করে পাকা অংশ থেকে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে পুনরায় রোপনের দাবি জানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় এবং স্থানীয় ও বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে নজরে আসে সংশ্লিষ্টদের। এরপর গাছগুলো অপসারণ করে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে পুনরায় রোপন করা হয়েছে।
নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল হক রাসেল বলেন, রাণীনগর কৃষি অধিদপ্তর আমাদের না জানিয়েই অপরিকল্পীত ভাবে পাকা অংশ ঘেঁষে তালগাছগুলো রোপন করেছিলো। পরে বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হলে আমাদের নজরে আসে। এরপর গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার আমরা গাছগুলো অপসারণ করে পাকা অংশ থেকে নিরাপদ দূরত্বে¡ পুনরায় রোপন করেছি।
প্রদর্শনীর তালগাছ রোপনে ব্যয় বরাদ্দের পরিমাণ জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা নাজনীন বলেন, আপনি এটা আমার কাছে জানতে পারেন না। প্রদর্শনীতে ব্যয় বরাদ্দ যেভাবে আছে সরকারী বিধিমালা অনুসারে সেভাবেই খরচ করা হয়েছে।
জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, সড়ক ও জনপদ বিভাগের রাস্তা বাদ দিয়ে কৃষক কাজ করে এরকম মেঠোপথে বা শাখা সড়কে তালগাছগুলো রোপনের জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে। কিন্তু পরিকল্পনায় ভুল করে রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়কে গাছগুলো রোপন করেছেন। তালগাছ রোপনে ব্যয় বরাদ্দের পরিমান জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রকল্প অফিস থেকে গাছ কিনে আমাদের সরবরাহ করেছেন, আমরা শুধু গাছগুলো রোপন করেছিমাত্র। তবে কি পরিমাণ ব্যয় বরাদ্দ রয়েছে তা ওই সংশ্লিষ্ট প্রকল্প কর্মকর্তা বলতে পারবেন।