• মাধুকর প্রতিনিধি
  • ২১ ঘন্টা আগে

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সঙ্গে রংপুর বিভাগের সাংবাদিকদের মতবিনিময়



পিআইডি, রংপুর►

রংপুর বিভাগের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভা রবিবার (১৯শে জানুয়ারি) সকালে রংপুর জেলাপ্রশাকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, গণমাধ্যমকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করার জন্য এই সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। গণমাধ্যমগুলো যাতে যথাযথভাবে তাদের ভূমিকা পালনে সক্ষম হয় সেই উপযোগী নীতিমালা প্রণয়নে কমিশন সুপারিশ করবে। আইন-কানুন ও নিয়ম-নীতি সঠিকভাবে অনুসরণ করে সাংবাদিকতার প্রতিযোগিতায় যারা টিকে থাকবে তারাই গ্রহণযোগ্য হবে। সুস্থ প্রতিযোগিতা না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাভাবিক বিকাশ সম্ভব না। দেশে ব্যক্তি-ব্যবসায়িক স্বার্থে বা রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর জন্য সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহারের প্রবণতা প্রবল। দেশের গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ন্যূনতম একটি বেতনের নিশ্চয়তা থাকা দরকার। সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা যদি না থাকে, তাহলে তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার মানসিকতা থাকবে না।

গত ১৫ বছরের দুঃশাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কর্পোরেট হাউসগুলি তাদের রাজনৈতিক প্রভাব এবং সরকারের ফ্যাসিবাদী প্রবণতা প্রয়োগ করে এবং জনস্বার্থকে বাদ দিয়ে তাদের মালিকদের পক্ষে আমলাতন্ত্র ব্যবহার করে মূলধারার গণমাধ্যমকে ব্যবহার করেছে। অন্যদিকে, স্বার্থান্বেষী মহল রাজনৈতিক ক্ষমতা, কালো টাকা এবং সাংবাদিকদের মধ্যে ঐক্য ও বিভাজনের অভাবের সুযোগ নিয়ে সাংবাদিকদের ব্যবহার করেছে। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে পত্রিকার সার্কুলেশনের সংখ্যা ডিএফপির মিডিয়া তালিকা তৈরিতে প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সাংবাদিকদের প্রস্তাবগুলির উপর আমাদের সুপারিশগুলি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জমা দেব। এই সুপারিশগুলো ভবিষ্যতে রেফারেন্স হিসাবে থাকবে।

মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণকারীগণ গণমাধ্যমের সংস্কারের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। উপস্থাপিত প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে— মিডিয়া কমিশন গঠন; সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভাগীয় পর্যায়ে পিআইবির শাখা অফিস স্থাপন; রাজধানীকেন্দ্রিক সাংবাদিক ও মফস্বল  এলাকার সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধার ব্যবধান নিরসন; সকল মিডিয়াকে ওয়েজবোর্ডের নীতিমালা অনুসরণে বাধ্যকরণ; সাংবাদিকতা পেশার স্বীকৃতি প্রদান; সাংবাদিকদের দলীয় প্রভাব মুক্ত রাখা; অনলাইন মিডিয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা; সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধমুলক আইন বাতিল; সাংবাদিকতার নন্যূতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ; ডিএফপি তালিকাভুক্তিকরণে দলীয় প্রভাব দূরীকরণ;  সাংবাদিকদের একক পরিচিতি নম্বর প্রদান; সাংবাদিকদের সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় নিয়ে আসা; সবার জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিতকরণ; ‍বিজ্ঞাপন প্রদানের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণ প্রভৃতি।

মতবিনিময় সভায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাক গীতিআরা নাসরীন, শামসুল হক জাহিদ, বেগম কামরুন্নেসা হাসান, মোস্তফা সবুজ, আব্দুল্লাহ আল মামুন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের উপসচিব কাজী জিয়াউল বাসেত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় রংপুর বিভাগের আট জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রায় ১২০ জন গণমাধ্যমকর্মী অংশ নেন।