• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৪-১০-২০২৪, সময়ঃ সকাল ১০:২৩

সাঘাটায় যমুনার ভাঙনের কবলে আশ্রয়ণ প্রকল্প



জয়নুল আবেদীন, সাঘাটা►

যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনের কবলে পড়েছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দিঘলকান্দি (পূর্ব) আশ্রায়ন প্রকল্প। গত তিন মাসের ব্যবধানে তিন শতাধিক ঘরবাড়ি ও অন্তত ২০০ একর আবাদি জমি বিলীন হয়েছে। আরও দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙনের ঝুঁকির মুখে রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ (পূর্ব) দিঘলকান্দি গ্রামে আশ্রায়ন প্রকল্পের ১৮ টি ব্যারাকে ৯০টি পরিবার রয়েছে। আশ্রায়ন প্রকল্পটি সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জুঁড়ে জনবসতি ও আবাদি জমি ভাঙন কবলে পড়েছে। নদীভাঙনের কবলে পড়া ওইসব আবাদি জমিতে সদ্য রোপন কৃত মরিচ, বেগুনের চারা কৃষকেরা তুলে নিচ্ছেন। নদীর পাড় থেকে কিছুটা দূরে কেউ কেউ আবার নতুন বসতঘর তৈরি করেছেন। 

সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসাহাক আলী আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘরগুলোর বিষয়ে জানান, যাদের নামে ঘরগুলো বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, নদী ভাঙন কবলে পড়লে তারা ভেঙে নিয়ে নিরাপদ স্থানে বসতি স্থাপন করতে পারবে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, এবার বর্ষা আসার শুরু থেকে পাল্লা দিয়ে নদী ভাঙছে। তাঁদের অনেকেই ভাঙন-আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। দক্ষিণ দিঘলকান্দি (পূর্ব) আশ্রায়ন প্রকল্পের আশ্রিত খুকি (৫৫) জানান, এ্যাগলা সোরকারি গর বেঙে যাওছে কয়দিন ধইর‌্যা গুম অয়না। হামরা এহোন কোনে যাই ? সুরবানু (৫৭) জানান, নদি বাঙগে গরের কাছে আইছে, আইজ গর না হরালে নদির মদ্দে যাবো গা। 

 ওই  গ্রামের কৃষক নুছুম উদ্দিন শেখ (৫৫) বলেন, ‘ঘরবাড়ি ভাঙ্গি গেচে, তার জন্নে হামরা সোরকারের কাচে ট্যাকা চাইনে। হামরা চাই, সোরকার নদি ভাঙ্গা বনদো করুক।’ একই ধরনের কথা বলেন, শুক্কুর শেখ (৫২),মনোহার শেখ,(৬২), শফিকুল ইসলাশ(৩২),কবির শেখ (৪২),ষাগর আলী ৪৫), আবুল শেখ (৬৩)সহ আরও কয়েকজন। হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জানান, ইউনিয়ন পরিষদে এখন কোনো বরাদ্দ নেই। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের জন্য সহায়তা করা দরকার। কিন্তু আমাদের হাতে এখন কোনো কাজ নেই, বরাদ্দও নেই। তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর মতো পরিস্থিতি নেই। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল ইসলাম বলেন, ওই চরাঞ্চলের জন্য নদী ভাঙনরোধে আপাতত কোনো কর্মসূচি নেই। তবে যমুনার ভাঙনরোধে সাঘাটার হলদিয়া হতে ফুলছড়ির পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের আওতায় সিসি ব্লক স্থাপনসহ নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ চলছে। গাইবান্ধা পানিউন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।