• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১৭-৭-২০২৪, সময়ঃ বিকাল ০৫:২১

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সংঘর্ষে উত্তপ্ত গাইবান্ধা



নিজস্ব প্রতিবেদক►

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গাইবান্ধায় কয়েক ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ-পাল্টা বিক্ষোভ এক পর্যায়ে গড়িয়েছে সংঘাতে। সারাদেশে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় আন্দোলনকারী ছয়জনের মৃত্যুর জের ধরে বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী শহরের বড় মসজিদ এলাকা থেকে মিছিল বের করে। বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে মিছিলটি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে থেকে ঘুরে পুরাতন বাজার এলাকায় যায়। পরে সেখান থেকে ঘুরে ১নং রেলগেট এলাকায় অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। এ সময় ডিবি রোড ও রেলপথ অবরোধ করে তারা। বিপরীতে পুলিশ অবস্থান নেয় ট্রাফিক মোড়ের পাশে।

অপরদিকে ১ নম্বর রেলগেট এলাকায় আওয়ামী লীগের জেলা কার্যালয়ে অবস্থান নেন দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা।  পুলিশ বেষ্টনীর ভেতর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে বেলা ১২টার দিকে উত্তেজনা বাড়ে আন্দোলনকারী ও সরকারদলীয় সংগঠনের নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে। এরই মধ্যে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিনা অনুমতিতে যোগ দেয় বিএনপি এর ছাত্র দল। ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগ কার্যালায় থেকে উস্কানীমূলক আচরণ হিসেবে শান্তিপূর্ণ ভাবে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীদের উপর ইট ছুড়তে থাকে। উত্তেজনার একপর্যায়ে ছাত্র দল জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের মারধর করে এবং অন্তত ১১টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশও। এই ঘটনার সূত্রপাত কোন আন্দোলনকারী করেনি বলে জানা যায়।

দফায় দফায় সংঘাতের ঘটনায় আহত হয়েছেন কয়েকশ মানুষ। এর মধ্যে ২০ জন সাংবাদিক এবং শতাধিক আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র মো. মতলুবর রহমান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুরজামান রিংকু, সাবেক পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট শাহ্ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন, জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আহসান হাবিব রাজিবসহ অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। এরমধ্যে পৌরসভার মেয়র মো. মতলুবর রহমানের আঘাত গুরুতর বলে জানা গেছে।

দুপুর একটার দিকে আওয়ামী লীগের জেলা কার্যালয় থেকে হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে দলের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শহরের সার্কুলার রোড অতিক্রম করার সময় মিছিল থেকে কিছু কর্মী জেলা বিএনপির অফিসে ভাংচুর চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। মিছিলটি পৌরপার্কে শহিদ মিনার চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে গায়েবানা জানাযায় অংশ নেন নেতাকর্মীরা।

পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এসময় শহরের সবগুলো সড়কে যান চলাচল এবং দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।