• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১২-৮-২০২৪, সময়ঃ সকাল ১০:১৭

‘সাব্বাশ, এদেন করিই সবাই দ্যাশের প্রয়োজনোত আসুক’



আবু সায়েম►

রবিবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যা। গাইবান্ধা জেলা শহরের ১ নম্বর ট্রাফিক মোড় এলাকা। সার্কুলার রোড ও ডিবি রোডে তখন যানবাহনের জটলা। এদিনও ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা পালন করেছেন সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর দায়িত্ব। কিন্তু বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা না নামতেই সড়কে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। দায়িত্বরত আনসার সদস্য স্বাধীন মিয়া ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছিলেন। ট্রাফিক মোড়ের পাশেই এ সময় অফিস শেষে বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এক চাকিরজীবী নারী। সড়কের বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখেই লাঠি হাতে নেমে পড়েন রাস্তায়। শুরু করেন সড়কে শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব। পথচারী, যাত্রী কিংবা চালক সবার চোখ তখন আটকে যাচ্ছিল ওই নারীর দিকে।

লাঠি হাতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করা ওই নারীর নাম প্রতীমা রানী মোদক। তার বাড়ি সদর উপজেলার উত্তর ঘাগোয়া গ্রামের হিন্দু পাড়ায়। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালনকালে তার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘অফিস শেষে বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু চোখ আটকে যায় সড়কে। সারাদিন বাচ্চারা বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করলো। তখন ভালোই ছিল রাস্তা। কিন্তু বিকেলের পর থেকে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। আনসার ভাইরা দু’একজন সামলাতে পারছিলেন না। এমন অবস্থা দেখে সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে রাস্তাই নেমে পড়ি।’ প্রতীমা রানী মোদক আরও বলেন, আমার মেয়ে রংপুরে পড়াশোনা করে। তার মতো অনেকেই আন্দোলনের শুরু থেকে আছে। এখনও তারা রাজপথে কাজ করছে। তারাই আমার অনুপ্রেরণা। তাদের দেখানো পথেই চলুক বাংলাদেশ।’

বিকেল ৫টার পর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ১ নং ট্রাফিক মোড় এলাকায় সার্কুলার রোডে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করেন প্রতীমা রানী মোদক। এ সময় পথচারী, যাত্রী কিংবা চালক সবার চোখ তখন আটকে যাচ্ছিল তার দিকে। রফিকুল ইসলাম নামে এক রিক্সাচালক তখন বলছিলেন, ‘সাব্বাশ, এদেন করিই সবাই দ্যাশের প্রয়োজনোত আসুক।’ সৌরভ মিয়া নামে এক পথচারী এ সময় প্রতিবেদককে বলেন, ‘এটাই বাংলাদেশ। এমনভাবে সবাই আসুক দেশের প্রয়োজনে। সবাই মিলে আমরা একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ব।’