• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১১-৬-২০২৫, সময়ঃ সকাল ১০:৪৭

মঙ্গলে শক্তির নতুন যুগ: বায়ুমণ্ডল থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে চীন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক►

পৃথিবী থেকে ২৬ কোটি কিলোমিটার দূরে মঙ্গল গ্রহে তৈরি হবে বিদ্যুৎ, সংরক্ষণ করা যাবে শক্তি। শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও এ নিয়ে গবেষণায় নতুন মাইলফলক অর্জন করেছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হবে মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডলের অণু। কী আছে এই ব্যবস্থায়?

২০ জুলাই, ১৯৬৯। প্রথম মানব হিসেবে চাঁদের বুকে পা রেখে ইতিহাস তৈরি করেন মার্কিন নভোচারী নীল আর্মস্ট্রং। এতে মহাকাশ দ্বৈরথে সোভিয়েত ইউনিয়নের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র।

৫৬ বছর পর মহাকাশ অভিযানে মস্কোর স্থলাভিষিক্ত বেইজিং। বর্তমানে মঙ্গলগ্রহ নিয়ে চলছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈরথ। ২০৪০ সালের নাগাদ দুই দেশই মঙ্গলে নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনায় কাজ করছে পুরোদমে। যদিও প্রযুক্তিগত দিক থেকে ওয়াশিংটনের চেয়ে একধাপ এগিয়ে গেলো বেইজিং।

লাল গ্রহটিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সংরক্ষণের নতুন ব্যবস্থা তৈরি করেছে চীনা বিজ্ঞানীরা। দেশটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এক্ষেত্রে ব্যবহার করতে চান মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল। যেখানে লুকিয়ে থাকা অণুগুলোর ভর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের চেয়ে বেশি ও উষ্ণ। এই অণুগুলোকেই বিদ্যুতে পরিণত করা সম্ভব।

চীন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শি লিংফেং বলেন, ‘বায়ুমণ্ডলটি বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থায় শক্তি উৎপাদনকারীর কাজ করে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে এটি পুরো ব্যবস্থায় রক্তের মতো কাজ করে। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল তাপ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা যায়।’

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে ৯৫ শতাংশই কার্বন ডাই অক্সাইড। গ্যাসটিকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব। এছাড়াও একই প্রক্রিয়ায় লিথিয়াম ব্যাটারির মতো তৈরি করা যাবে মার্স ব্যাটারি। যা থেকে শক্তি সংরক্ষণ করে মঙ্গলযানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব।

চীন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জিয়াও জু বলেন, ‘লিথিয়াম এয়ার ব্যাটারি ও লিথিয়াম কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যাটারির মতো একই প্রক্রিয়ায় কাজ করে মার্স ব্যাটারি। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল থেকে এটি উপদানগুলো শুষে নেয়। যা থেকে পরবর্তীতে উৎপন্ন হয় শক্তি।’

সম্প্রতি মঙ্গল অভিযানের গতি বাড়িয়েছে চীন। ২০২৮ সালে দেশটি মঙ্গলে পাঠাবে তিয়ানওয়েন- ৩ মহাকাশযান। সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক চলছে, লাল গ্রহের স্যাম্পল নিয়ে ২০৩১ সালে পৃথিবীতে ফিরে আসবে এটি।