• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৬-৬-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৫:২০

গাইবান্ধা স্টেডিয়াম সংলগ্ন বধ্যভূমিসহ জেলার চিহ্নিত সকল বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও নির্মান বিষয়ক মতবিনিময় সভা



নিজস্ব প্রতিবেদক ►

গাইবান্ধায় বধ্যভূমিতে হবে আইটি সেন্টার" এরই প্রতিবাদে জেলা বধ্যভূমি সংরক্ষণ কমিটির আয়োজনে সোমবার শহরের পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে গাইবান্ধা স্টেডিয়াম সংলগ্ন বধ্যভূমিসহ জেলার চিহ্নিত সকল বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও নির্মান বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন  বধ্যভূমি সংরক্ষণ কমিটি গাইবান্ধার আহবায়ক জি,এম চৌধুরী মিঠু। 

তিনি বলেন- ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযোদ্ধা চলাকালে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী গনহত্যা করেছিল। আর বধ্যভূমিতে তাদের সমাধি দেয়া হয়। এতে করে গণকবর সংরক্ষিত হয়। ৩৫টির মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গাইবান্ধা জেলায় ৭টি বধ্যভূমি স্থানান্তরিত হয়। তার মধ্যে প্রধান হলো স্টেডিয়াম সংলগ্ন বধ্যভূমি। সে সময় মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় বরাবর গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কে চিঠি দেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয় মতিউর রহমান সহ বধ্যভূমি হিসেবে ঘোষনা দেয় এবং স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির কথা বলেন। এই বধ্যভূমিটি সরকার কর্তৃক চিহ্নিত। বধ্যভূমির জায়গাটি  কোন মুক্তিযোদ্ধা নিজের বলে দাবী করছে সে বিষয়ে আপত্তি পোষন করেন। পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসককে শুনানির কথা বলেন।

এ্যাড: শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন" প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন- এখানে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বলেই বধ্যভূমি হয়েছিল। একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হয়ে কার কথায়, কার নের্তৃত্বে,  কি উদ্দেশ্যে এটা বধ্যভূমি নয় বলে দাবী করছেন। তিনি বধ্যভূমি সংরক্ষণ কমিটির বদলে বধ্যভূমি বাস্তবায়ন কমিটি করার প্রস্তাব রাখেন।

"নাগরিক কমিটির আহবায়ক আমিনুল ইসলাম  গোলাপ" জেলা প্রশাসক এর উদ্দেশ্যে বলেন- এটি বধ্যভূমি কিনা, এ বিষয়ে সন্দেহ থাকলে গণশুনানির ব্যবস্থা করেন। অন্যথায় এমন একটি বিষয় নিয়ে গনআন্দোলন তুলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

" মিহির ঘোষ বলেন - বধ্যভূমিতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু পুত্র শেখ কামাল একজন মুক্তিযোদ্ধা।  এখানে বধ্যভূমি না হলে শেখ কামালকে কলঙ্কিত  করা হবে। এতে করে মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করা হবে।

গাইবান্ধা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মাযহার উল মান্নান, নাগরিক কমিটির আহবায়ক আমিনুল ইসলাম গোলাপ,বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন মজিবর রহমান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিট কমান্ড এর সাবেক কমান্ডার মাহমুদুল হক শাহজাদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মকছুদার রহমান শাহান, জেলা আওয়ামীলীগ সহ- সভাপতি রনজিত বকসী সূর্য, এ্যাড: শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুরজ্জামান রিংকু,  সদস্য মোস্তাক আহমেদ রঞ্জু, কবি দেবাশীষ দাস দেবু, জাসদ সভাপতি গোলাম মারুফ মনা, বাসদ মার্কসবাদী সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী, বাসদ সদস্য সচিব মঞ্জুর আলম মিঠু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সাধারণ সম্পাদক  রউফ মিয়া, এ্যাড: মোস্তফা মনিরুজ্জামান, নারী মুক্তি কেন্দ্র সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী সহ অনেকে।

জেলা প্রশাসক এর উদ্দেশ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মকছুদার রহমান শাহান বলেন- একটি গনশুনানির ব্যবস্থা করলে সবাই বলবে এটা বধ্যভূমির জায়গা। তিনি জেলা প্রশাসক এর চিঠির বিরুদ্ধে জোড়ালো প্রতিবাদ করেন।

উল্লেখ্য, গাইবান্ধা গোরস্থানপাড়াস্থ জেলার শাহ আব্দুল হামিদ স্টেডিয়াম সংলগ্ন গোবিন্দপুর মৌজার ২২৪৬ দাগের জে এল নং ৯৯ এর ১০০২ খতিয়ান এ৫৯০০ একর  জমি রয়েছে যা বধ্যভূমি নামে পরিচিত। উক্ত দাগে ২৬০০ একর সহ ৬ টি দাগ হতে মোট ১৫০০০ একর জমিতে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেটর সেন্টার নিমিত্ত চিহ্নিত করে অধিগ্রহণ এর কার্যক্রম গ্রহন করে জেলা প্রশাসন।  এতে করে বধ্যভূমিতে আইটি সেন্টার না করে অন্যত্র করতে বক্তারা জেলা প্রশাসন এর সু দৃষ্টি কামনা করে সঠিক তথ্য দিয়ে প্রস্তাব প্রত্যাহার দাবি জানান। অন্যথায় মানববন্ধন ও কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ এর দাবি জানান।