• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ১১-৫-২০২৩, সময়ঃ রাত ০৮:৩৬
  • ১১০ বার দেখা হয়েছে

সৈয়দপুরে অপ্রাপ্ত বয়স্ক স্বামী-স্ত্রী ঘর সংসার করছে এফিডেভিটে

সৈয়দপুরে অপ্রাপ্ত বয়স্ক স্বামী-স্ত্রী ঘর সংসার করছে এফিডেভিটে

শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর ►

মাত্র ১৬ বছর বয়সের স্কুল ছাত্রীকে বিয়ে করে দিব্বি ঘর সংসার করছে ১৭ বছরের কিশোর। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলেও শুধু  এফিডেভিটের বদৌলতে স্বামী-স্ত্রীর মত বসবাস করছে তারা। গত ৫ দিন থেকে এই নব বর-বধুকে দেখতে কৌতূহলী মানুষের দিনরাত ভিড় জমছে বিয়ে বাড়িতে। ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশেই এমন বাল্য বিয়ের ঘটনা ঘটলেও নির্বিকার প্রশাসন। নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হাজারীহাট পাকাধারা গ্রামের চৌধুরীপাড়ার এই ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে।

জানা যায়, ওই গ্রামের পাইকারী সবজি ব্যবসায়ী সানারুলের ছেলে মুন্না (১৭)। লেখাপড়া ছেড়ে বখাটেপনায় মত্ত। এখন  অনলাইন জুয়া থাই লটারীর এজেন্ট হিসেবে পরিচিত। ওই জুয়ার মাধ্যমে প্রতারণা করে অনেক প্রবাসীর লাখ লাখ হাতিয়ে নিয়ে বেপরোয়া জীবন যাপন তার। এরই মাঝে পার্শবর্তী কামারপুকুর ইউনিয়নের বাকডোকরা গ্রামের মেয়ে ও কামারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছে।

বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের পরিবার এই সম্পর্ক মেনে না নেয়ায় গত ২ মে ওই মেয়েকে নিয়ে পালায় মুন্না। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের ফেরাতে না পেরে এবং সম্মানের ভয়ে মেয়ের অভিভাবকরা সম্মত হয়। পরে বিয়ে দেয়ার আশ্বাসে ছেলে মেয়ে ফিরে আসে। স্থানীয় বিবাহ রেজিষ্টার কাজী আফজালের মাধ্যমে গত ৬ মে ভুয়া তথ্য দিয়ে আদালতে এফিডেভিট করিয়েছে। আর এটাকে কোর্ট ম্যারেজ হয়েছে বলে প্রচার চালিয়ে সেদিন থেকেই অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোর-কিশোরী দাম্পত্য জীবন যাপন করছে। 

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকালে গেলে ছেলের পরিবার বর-কনেকে সরিয়ে দেয়। পরে ছেলের বাবা সানারুল বলেন, অপ্রাপ্ত তাতে কি? নিয়ম মেনেই এফিডেভিট করে তারা স্বামী-স্ত্রী। আমরা অভিভাবকরাই এটা করেছি। মেম্বার চেয়ারম্যানরাও জানে। তারা কিছুই বলেনি। সেখানে প্রশাসন বা সাংবাদিকের কি? শত শত বিয়ে এভাবে হচ্ছে। সেগুলোতে সমস্যা না হলে আমাদেরও হবেনা। টাকা হলে অবৈধকেও বৈধ বানানো যায়। কাজীই সেপথ করে দিয়েছে। 

হাজারীহাট মোহাম্মদীয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষক ও বিবাহ রেজিষ্টার কাজী আফজাল হোসেন এফিডেভিট করিয়ে দেয়া ও বিয়ে পড়ানোর বিষয় অস্বীকার করেছেন। ছেলে মেয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক স্বীকার করে মেয়ের পরিবার জানিয়েছে শুধু এভিডেভিট করা হয়েছে, বিয়ে হয়নি। কামারপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন মোবাইল রিসিভ না করায় তার মন্তব্য জানা যায়নি।

কাশিরাম বেলপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান লানছু হাসান চৌধুরীর বাড়ির পাশেই বাল্যবিয়ে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিয়ের বিষয়টা আমার জানা নাই। তবে প্রতিবেশী সানারুলের ছেলের সাথে একটি মেয়ে পালিয়ে এসে তার বাড়িতে অবস্থান করছে। ছেলে মেয়ের পরিবার বিষয়টি নিজেরাই মিমাংসা করছে। এফিডেভিট করেছে বলে শুনেছি মাত্র।

সৈয়দপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিনুল ইসলাম বলেন, এধরণের কোন তথ্য জানা নাই। তবে যেহেতু আপনারা জানালেন এখন খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়