• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৭-৫-২০২৩, সময়ঃ সকাল ১০:৩৪
  • ৬১ বার দেখা হয়েছে

রংপুরে গণসমাবেশে বক্তারা তিস্তা মহাপরিকল্পনায় অর্থ বরাদ্দ না হলে জবাব

রংপুরে গণসমাবেশে বক্তারা তিস্তা মহাপরিকল্পনায় অর্থ বরাদ্দ না হলে জবাব

রংপুর সংবাদদাতা ►

আসন্ন বাজেটে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া না হলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ এর জবাব দেবে। উত্তরাঞ্চলের মানুষকে বাঁচাতে তিস্তা সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। শনিবার বিকেলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে আয়োজিত এক গণসমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। এছাড়া সমাবেশ থেকে আগামী ১ জুন রংপুর বিভাগে পাঁচ মিনিট স্তব্ধ থাকা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

এ দিন বিকেলে তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের ডাকে আয়োজিত গণসমাবেশের উদ্বোধন করেন রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারি এমপি ও বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান। তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্য নজরুল ইসলাম হক্কানীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করেন সংগঠনের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য বখতিয়ার হোসেন শিশির। আরও বক্তব্য দেন পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম কানুসহ তিস্তাপাড়ের জনপ্রতিনিধিরা।

বক্তারা বলেন, ২০১৪ সালের পর থেকে উজানে গজলডোবার মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে ভারত একতরফা পানি প্রত্যাহার করছে। কথা ছিল খরাকালের জন্য বাংলাদেশের অংশের তিস্তায় পানি প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে তিস্তাচুক্তি সই হবে। কিন্তু গত ১২ বছরেও তা হয়নি, উল্টো তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমবঙ্গের সরকার আরও দুটি খাল খননের পরিকল্পনা নিয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে সম্পূরক সেচের জন্য তলানির যেটুকু পানি বাংলাদেশ পায়, তাও থাকবে না। ফলে তিস্তাপাড়ের বিস্তীর্ণ জনপদ মরুভূমিতে পরিণত হবে। বর্ষাকালে বাড়বে বন্যা ও নদীভাঙন। 

বক্তারা আরও বলেন, আগামী সংসদে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি উত্থাপন করা হবে। পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে হয়েছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নও নিজস্ব অর্থায়নে করতে হবে। এতে আট থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা লাগবে। স্থানীয় এমপিরা যদি তিস্তা মহাপরিকল্পনার আন্দোলনে শরিক না হন তাহলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রংপুর তথা তিস্তাপাড়ের মানুষ তাঁদের বর্জন করবে।

সমাবেশে উত্তরবঙ্গকে মরুভূমি হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করে। দাবিগুলো হলো– তিস্তা নদী সুরায় বিজ্ঞানসম্মতভাবে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ দ্রুত বাস্তুবায়ন। অভিন্ন নদী হিসেবে ভারতের সঙ্গে ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে তিস্তাচুক্তি সম্পন্ন করা। তিস্তা নদীতে সারা বছর পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে জলাধার নির্মাণ। শাখা-প্রশাখা ও উপ-শাখাগুলোর সঙ্গে নদীর পূর্বেকার সংযোগ স্থাপন ও নৌ চলাচল ফের চালু। ভূমিদস্যুদের হাত থেকে তিস্তার শাখা-প্রশাখা দখলমুক্ত করা, নদীর বুকে ও তীরে গড়ে ওঠা সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ।

নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ। ভাঙন, বন্যা ও খরায় তিগ্রস্ত কৃষকদের স্বার্থসংরণ, নদীভাঙনের শিকার ভূমিহীন, গৃহহীন, মৎস্যজীবীসহ উদ্বাস্তু মানুষের পুনর্বাসন। তিস্তা মহাপরিকল্পনায় নদী ও তীরবর্তী কৃষকের স্বার্থ সুরায় কৃষক সমবায় এবং কৃষিভিত্তিক শিল্প কলকারখানা গড়ে তোলা। মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিগ্রস্তদের তিপূরণ এবং প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিস্তাপাড়ের মানুষদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।

সমাবেশে বৃহত্তর রংপুরের পাঁচ জেলা নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার নদীপাড়ের মানুষজন অংশ নেন।

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়