• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ৩-৪-২০২৩, সময়ঃ বিকাল ০৫:২৩
  • ৯২ বার দেখা হয়েছে

বিরলে ১ শত একর জমিতে বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি চাষে আগ্রহী

বিরলে ১ শত একর জমিতে বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি চাষে আগ্রহী

সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, দিনাজপুর ►

দিনাজপুর বিরলের ধামইর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের আবাদি জমিতে বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়াই জমিতে জৈব সারের প্রয়োগ, নেট ব্যবহার , হলুদ আঠালো ফাঁদ, আগাছা দমন মালচিং পদ্ধতি ও পোকামাকড় দমনে ফেরোমন ট্র্যাপের ব্যবহার করে ১০০ একর জমিতে ৫০০ কৃষক-কৃষানি ২৫টি দলে  ভিভক্ত হয়ে নিরাপদ সবজি চাষ করছেন। তবে অল্প সময়ে মধ্যে উপকার পেয়ে এই ইউনিয়নের সহ পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের অনেক কৃষক তাদের বাকি জমির মধ্যে নিজ খরচে বিষমুক্ত সবজি চাষ শুরু করেছেন ।

দিনাজপুর আঞ্চলিক কৃষি অধিদপ্তরে অতিরিক্ত পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ গত সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় তার কার্যালয়ে এই তথ্য জানান। প্রদীপ কুমার গুহ  বলেন, তিনি বেশ কয়েকদিন জেলার বিরল উপজেলার এসব বিষমুক্ত সবজি চাষে ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ওই উপজেলার ধামইর ইউনিয়নের কেশবপুর, মাটিয়ান, গিরিধরপুর, কাশিডাঙ্গা, গোবিন্দপুর এলাকার ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বেগুন গাছগুলোতে থোকায় থোকায় বেগুনি ঝুলছে ।  বাজাওে নিরাপদ বেগুন বিক্রি শুরু করেছেন চাষীরা । টমেটোগাছে ফুটে আছে হলুদ ফুল। কিছু টমেটোর গাছে ৫০ থেকে ৭০ টা পর্যন্ত টমেটো এসেছে ।  এসব সবজি রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াই চাষ করতে কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে সহযোগিতা দেয়া হয়েছে।  মিষ্টিকুমড়া ও লাউয়ের লকলকে ডগায় সাদা-হলুদ ফুল বিষমুক্ত অবস্থায় এখন জমিতে শোভা পাচ্ছে।  মাচাল তৈরী করা হয়েছে পটল ও করলা গাছে বড় হচ্ছে ।  কিছু গাছে পটলের ফুল এসেছে । অল্প কিছু দিনের মধ্যে পটল ও করলা বড় হয়ে যাবে ।   

বিরল উপজেলার পাইপপাড়া গ্রামের কৃষক ফজরুল রহমান জানান, মিষ্টিকুমড়া ও লাউয়ের লকলকে ডগায় সাদা-হলুদ ফুল বিষমুক্ত অবস্থায় এখন জমিতে শোভা পাচ্ছে। তার সবজি চাষের জমির পরিমাণ ২০ শতক। তবে তার গ্রামে অনেকে আরো বেশি পরিমান জমিতে বিষমুক্ত সবজি চাষ করেছেন। পৃথক জমিতে পৃথক শস্যের আবাদ হয় এ অঞ্চলে। কেউ লাগিয়েছেন বেগুন, টমেটো, চিচিঙ্গা, করলা। কেউবা লাউ, মিষ্টিকুমড়া। আছে শিম-পটোলের ক্ষেতও। প্রকল্প থেকে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নেয়ার জন্য প্রতিটি দলে একটি করে ভ্যান দেয়া হবে ।

কৃষক মনোয়ার হোসেন বলেন, রমজান মাসে বাজারে বেগুন ও সবজির চাহিদা বেশি থাকে। ভালো দাম ও বেশি ফলনের আশায় কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহায়তা নিয়ে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করেছি। জমিতে জৈব সার প্রয়োগের পাশাপাশি আগাছা দমনে মালচিং পদ্ধতি, পোকামাকড় দমনে ফেরোমন ট্র্যাপ, হলুদ আঠালো ফাঁদ বসানো হয়েছে। এবার নিরাপদ ও বিষমুক্ত সবজি চাষ করে বাজারে গিয়ে গর্ব করে বলতে পারছি। তাছাড়া বাজারে বিষমুক্ত সবজির চাহিদা এবং দামও বেশি। মানুষকে নিরাপদ সবজি খাওয়াতে পেরে অন্তরে আনন্দ পাই। আগে সপ্তাহে দু-তিনবার কীটনাশক ছিটাতাম। ফাঁদ দেয়ার পরে সেই খরচটা বেঁচে গেছে। আগে সেচ দিতে হতো সপ্তাহে অন্তত একবার। এখন সেখানে মাসে দুবার সেচ দিতে হচ্ছে।

অন্যদিকে নিড়ানি খরচ কমেছে। আগের নিয়মে আবাদ করলে ২০ শতকে খরচ পড়ত ৩৫ থেকে ৩৬ হাজার টাকা। এখন সেখানে খরচ হচ্ছে ১৮ থেকে ১৯ হাজার টাকা। ঠিকমতো ফলন হলে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কেজি বেগুন পাব। রমজানে বেগুনের চাহিদা বেশি। পাইকারিতে সর্বনিম্ন ২৫ টাকা কেজি দর পেলে লাভ থাকবে ৬৫-৭০ হাজার টাকা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, নিরাপদ সবজি চাষ প্রকল্পে সফলতা দেখা যাচ্ছে। রবি মৌসুমে কৃষকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সার-বীজ ও কিছু উপকরণ সহায়তা দেয়া হয়েছে। পরে কৃষকরা নিজে থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিরাপদ সবজি চাষ শুরু করেছেন। তারা জৈব সারও উৎপাদন করছেন। ধামইর ইউনিয়নে কৃষকদের নিয়ে ২৫টি দল করা হয়েছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়