• মাধুকর প্রতিনিধি
  • তারিখঃ ২৩-৫-২০২৩, সময়ঃ সকাল ০৯:১৮
  • ৫২ বার দেখা হয়েছে

রাণীনগরে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ

রাণীনগরে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ

আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি ►

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা সদরের আল-আমিন দাখিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক (শরীরচর্চা) হারুনুর রশিদ হারুনের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার মাদ্রাসা চলাকালে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিভিন্ন ভাবে তিনি যৌন হয়রানি করেছেন। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।

এ ঘটনায় শিক্ষক হারুনের বিরুদ্ধে সোমবার মাদ্রাসার কয়েকজন ছাত্রী ও অভিভাবক মাদ্রাসা সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ প্রদান করে। শিক্ষক হারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ওই মাদ্রাসার ছাত্রীদের জড়িয়ে ধরা, ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থান নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলা, ছাত্রীরা দুষ্টামি করলে ছাত্র দ্বারা ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়ানো এবং চুমু খাবার নির্দেশ দেন।

জানা গেছে, ওই শিক্ষক মাদ্রাসায় বেশ কিছুদিন ধরে এসব কর্মকান্ড চালিয়ে আসছেন। সম্পতি রবিবার মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর শরীর নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তাসহ বিভিন্নভাবে তাকে যৌন হয়রানি করলে ঘটনাটি শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকায় জানাজানি হয়। এরপর শুরু হয় ওই শিক্ষককে নিয়ে নানা সমালোচনা। এমনকি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। 

যৌন হয়রানির স্বীকার পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রী জানান, রবিবার কাশে এক ছাত্র আমাকে খুব বিরক্ত করছিল। এ সময় আমি তাকে বার বার নিষেধ করার পরেও সে বিরক্ত করা ছাড়ছিল না। তাই আমি তার এক হাত মুচরেধরি। এ সময় শিক্ষক হারুন এসে আমাকে বকাঝকা শুরু করেন। একপর্যায়ে ওই শিক্ষক আমার শরীরের স্পর্শকাতর স্থান নিয়ে অশ্লীল কথা বলে এবং ওই ছাত্রকে আমার ওড়নার ভিতরে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে বলেন। পরে আমি বিষয়টি মাদ্রাসার আয়া ও ম্যাডাকে জানাই। মাদ্রাসা থেকে বাড়ি গিয়ে পরিবারকে জানায়। এরপর ঘটনার সুষ্ট বিচার চেয়ে সোমবার মাদ্রাসার সুপারকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি।

ওই মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণিতে পড়–য়া আরেক ছাত্রী বলেন, শিক্ষক হারুন বেশ কিছুদিন থেকে আমাকেসহ মাদ্রাসার অনেক ছাত্রীদের অশ্লীল কথাবার্তা বলা, জড়িয়ে ধরা, শরীরের বিভিন্ন ষ্পর্শকাতর স্থান নিয়ে ব্যাঙ্গ করে মন্তব্য করাসহ নানাভাবে যৌন হয়রানি করেন। যে কারণে আমরা তার কাশ করতে খুব ভয় পাই। এতদিন আমরা লজ্জায় বিষয়গুলো কাউকে বলতে পারিনি। রবিবার আমার এক সহপাঠীর সাথে ঘটনা ঘটলে আমরা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছি। এরপর বিষয়টি শিক্ষকসহ অভিভাবকদের জানিয়েছি। আমরা ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

যৌন হয়রানির স্বীকার ওই ছাত্রীর মা বলেন, আমার মেয়ে মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে এসে বিষয়টি আমাকে জানান। লোক লজ্জার ভরে আমরা কাউকে বলতে চাইনি। কিন্তু ঘটনাটি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, একজন শিক্ষক যদি ছাত্রীদের সাথে এমন অচরণ করেন তাহলে শিক্ষার্থীরা কি শুখবেন। মাদ্রাসায় এসব ঘটনা বন্ধ করাসহ ওই শিক্ষকের ব্যবস্থা হওয়া দরকার।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক হারুনুর রশিদ হারুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করিনি। আমি প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছি। তার দাবি- শিক্ষার্থীদের ¯েœহের মাধ্যমে শাসন করেছি। ওই ছাত্রী আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছে সেটি সঠিক নয়। তিনি আরও বলেন, ওই মেয়েটির মাথায় সমস্যা আছে। আর তার কথা শুনে আমার প্রতিপক্ষ আমাকে ফাঁসানো চেষ্টা করছে।

মাদ্রাসার সুপার শরিফ উদ্দীন মাজহারি বলেন, মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীসহ কয়েকজন ছাত্রী এবং অভিভাবক সহকারি শিক্ষক হারুনুর রশিদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ বেশকিছু অভিযোগ মৌখিকভাবে দিয়েছেন। বিষয়টি মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্তকর্তা রুহুল আমিন বলেন, আল-আমিন মাদ্রাসায় ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার বিষয়টি আমি শুনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

নিউজটি শেয়ার করুন


এ জাতীয় আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়